চট্টগ্রাম এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের (সিইপিজেড) এক্সেল সিওর সুজের ৪০ শ্রমিককে স্থায়ীভাবে ছাঁটাই করা হয়েছে। পূর্ণ পাওনা পরিশোধ করার পরও ছাঁটাই করার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না তারা। তাই তৃতীয় দিনের মতো কারখানায় গিয়ে বিক্ষোভ করার চেষ্টা করেন। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্যবাহী গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহন সড়কে আটকা পড়েছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে সিইপিজেডের প্রবেশপথের অদূরে বিমানবন্দর অভিমুখী সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন শতাধিক শ্রমিক, যাদের মধ্যে অনেক নারীও আছেন।
এর আগে রোববার (৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। এ ঘটনায় ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে সাতজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে মালিকপক্ষ দুপুর ১২টার দিকে কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে।
হামলার ঘটনায় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীনরা হলো– প্রতিষ্ঠানটির কিউসি ম্যানেজার কামরুল হাসান (৪০), এইচআর ম্যানেজার শাকিল (৩৫), বাবুল (৩২), আবদুল হাকিম (৬০), বিপ্লব (২৫), সাইমুল ইসলাম (২৩) ও মামুনুর রশিদ (৩২)। চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজন আহত শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চাকরি থেকে ছাঁটাই হওয়া ৪০ জন শ্রমিক জোর করে কারখানায় প্রবেশ করতে চাইলে নিরাপত্তারক্ষীরা বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারা বাঁধা অতিক্রম করে কারখানার প্রবেশ গেট ভেঙ্গে কারখানায় ভাঙচুর ও কর্মকর্তা–শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়।
জানা গেছে, বিক্ষোভকারীরা সিইপিজডের ৪ নম্বর রোডের ৩ নম্বর সেক্টরের ‘এক্সেলসিয়র সুজ’ নামে একটি কারখানার শ্রমিক। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির ৪০ জন কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এ নিয়ে ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে খোলার প্রথমদিন থেকেই কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। গত শনিবার কারখানায় বিক্ষোভ করেন চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা। রোববার (৬ এপ্রিল) কারখানায় একদফা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে সাত শ্রমিক আহত হন। এসব ঘটনার পর সোমবার সকালে শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা ইপিজেড মোড়সহ আশপাশের এলাকায় সড়কের উভয়পাশে অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের এসপি (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ সোলায়মান জানান, ‘এক্সেল সিওর সুজ কারখানায় ৪০ জন শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে বিক্ষোভ করছিলেন শ্রমিকরা।
৭ এপ্রিল (সোমবার) সকালে কারখানার গেট বন্ধ দেখতে পেয়ে তারা আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে আমরা তাদের সরিয়ে দিই। এখন সিইপিজেড এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’
চট্টগ্রাম ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুস সোবহান বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের সকল পাওনা বুঝিয়ে দিলেও ওই কর্মীরা তাদের অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে বিক্ষোভ করে।