চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মশা নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই (Bacillus thuringiensis israelensis) লার্ভিসাইড প্রয়োগ করেছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) দুপুরে নগরীর ১৭ নম্বর (বাকলিয়া) ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ রোডের সামনের খালে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
এ সময় মেয়র বলেন, ‘মশা নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের কীটনাশকের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করছি। বিটিআই লার্ভিসাইড একটি পরীক্ষিত পদ্ধতি, যা যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোতে মশার লার্ভা ধ্বংসের জন্য ব্যবহার করা হয়। ঢাকায় এই প্রযুক্তি প্রয়োগের পর এবার আমরা চট্টগ্রামে এটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করছি।’
এটিকে পরিবেশবান্ধব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই কীটনাশকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো-এটি শুধু মশার লার্ভা ধ্বংস করে, কিন্তু অন্য জলজ প্রাণী যেমন ব্যাঙাচি, মাছ বা অন্যান্য জীবের কোনো ক্ষতি করে না।’
মেয়র বলেন, ‘বিটিআই মূলত মশার লার্ভার অন্ত্রে বিষক্রিয়া ঘটিয়ে তাদের ধ্বংস করে। তাই এটি বেশ কার্যকর একটি পদ্ধতি। যেহেতু এটি জৈবিক উপায়ে কাজ করে, তাই রাসায়নিক কীটনাশকের তুলনায় এটি অনেক বেশি নিরাপদ ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান দিতে পারে।’
মশার উপদ্রব কমাতে চসিক বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক প্রয়োগের পাশাপাশি নতুন ও কার্যকর পদ্ধতির খোঁজ করছে উল্লেখ করে মেয়র শাহাদাত বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই মশা নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। শুরুতে আমরা কিছু দেশীয় কীটনাশক ব্যবহার করেছিলাম, যা আংশিক কার্যকর ছিল। কিন্তু মশার ওষুধের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ায় আমাদের বারবার নতুন কৌশল নিতে হচ্ছে।’
দিনে দুবার মশার ওষুধ ছিটানোর নির্দেশনা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা সকালে এবং বিকেলে ঠিকমতো কাজ করছে না। তাই আমি নগরবাসীকে আহ্বান জানাব, যদি কোথাও মশার ওষুধ ছিটানো না হয়, তাহলে আমাদের জানান। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই লার্ভিসাইড প্রয়োগের কার্যকারিতা মূল্যায়নের পর এটি নগরজুড়ে প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
চসিক মেয়র বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা দেখব, এটি মশার লার্ভা ধ্বংসে কতটা কার্যকর হচ্ছে। যদি ফলাফল সন্তোষজনক হয়, তাহলে পুরো নগরীতে এর ব্যবহার বাড়ানো হবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি, উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব শর্মা, কামরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।