তাঁর হাসিতে দুলে উঠত রুপালি পর্দা, সেলুলয়েডের ফিতা হয়ে উঠত প্রাণবন্ত। এতটাই সম্মোহনী সৌন্দর্যের অধিকারী ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন। বাঙালিরা ভালোবেসে তাকে ডাকতেন মহানায়িকা।
(৬ এপ্রিল) রোববার ৯৪তম জন্মদিন মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের।
১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল বংলাদেশের পবনা জেলায় (তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রেসিডেন্সি) জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতা করুণাময় দাশগুপ্ত ও মা ইন্দিরা দেবী। অভিনেত্রীর পারিবারিক নাম ছিল রমা রায়। করুণাময়-ইন্দিরা দম্পতির তৃতীয় সন্তান চিলেন তিনি।
১৯৫২ সালের ‘শেষ কোথায়’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে নাম লেখান সুচিত্রা সেন। তবে ছবিটি আলোর মুখ দেখেনি। পরে রুপালি পর্দায় তার আত্মপ্রকাশ ঘটে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবির মাধ্যমে। এতে তার বিপরীতে ছিলেন উত্তম কুমার। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সুচিত্রাকে।
একের পর এক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র উপহার দিয়ে বাংলা সিনেমার সর্বকালের সেরা জুটি হয়ে ওঠেন উত্তম-সুচিত্রা। ক্যারিয়ারের উল্লেখ্যযোগ্য ছবির মধ্যে ‘কাজরী’, ‘ঢুলি’, ‘মরনের পরে’, ‘অগ্নিপরীক্ষা’, ‘অন্নপূর্ণার মন্দির’ তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
সুচিত্রা সেন আজীবন নায়িকা ছিলেন। কখনও কোনো পার্শ্ব চরিত্রে দেখা যায়নি তাকে। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত নায়িকা ইমেজ ধরে রাখতে বেছে নিয়েছিলেন স্বেচ্ছা আড়াল জীবন। টানা ২৫ বছর অভিনয়ের পর ১৯৭৮ সালে চলচ্চিত্র থেকে অবসরগ্রহণ করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর কখনও জনসম্মুখে দেখা দেননি তিনি।
২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি জীবনের লেনাদেনা চুকিয়ে অনন্তলোকে যাত্রা করেন তিনি। সেইসঙ্গে সমাপ্তি ঘটে বাংলা চলচ্চিত্র ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অধ্যায়ের।