হাজারো ভক্তের উপচে পড়া ভিড়ে
মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই (রাঙামাটি)।
প্রাগৈতিহাসিক তীর্থস্থান কাপ্তাইয়ের সীতাঘাট শ্রীশ্রী মাতা সীতা মন্দিরে মহা বারুণী স্নান উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত সনাতনী সম্প্রদায়ের ভক্তরা ঐতিহাসিক কর্ণফুলী নদীতে স্নান, সীতা মন্দির, শম্ভুনাথ মন্দির, কালি মন্দিরে পুজা দেওয়া এবং মহাপ্রসাদ গ্রহনের মাধ্যমে মা সীতা দেবীর কাছে তাদের মনের বাসনা ব্যক্ত করেছেন। এউপলক্ষে অষ্টপ্রহর ব্যাপী তারকব্রহ্ম মহানামযজ্ঞ সীতা মেলা এবং ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
যা জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একটি মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে সীতা মন্দির এলাকা। ঐতিহাসিক এই মন্দিরে বিভিন্ন নির্দশন ঘুরে ফিরে দেখছেন ভক্তরা।
মহাবারুণী স্নানে রাঙ্গুনিয়ার কুলকুরমাই থেকে আগত পুর্ণার্থী নিতাই দে, বাঁশখালি থেকে আসা অলক আর্চায্য বলেন, ঐতিহাসিক এই পবিত্র তীর্থ স্থানে আসতে পেরে নিজেদেরকে পূর্নবান মনে হচ্ছে। আমরা মা সীতা দেবীর বিভিন্ন নির্দশন ঘুরে ফিরে দেখছি এবং মহাবারুণী স্নানে স্নাত হয়ে পবিত্র হচ্ছি।
চন্দ্রঘোনা মিশন এলাকার পুর্ণার্থী নিলা মিত্র বলেন, আজকে এখানে এসে মা সীতা মন্দির দর্শন এবং বারুনী স্নান করলাম। ভীষন ভাল লাগছে।চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা থেকে বারুনী স্নানে আসা দুই বোন মনিষা রাহা ও কাকলী রাহা বলেন, প্রাগৈতিহাসিক সীতার ঘাট মন্দিরে এসে মহা বারুনী স্নানে অংশ নিলাম। বিভিন্ন মন্দির দর্শন করলাম।
সীতাঘাট মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি সমলেন্দু বিকাশ দাশ বলেন, ঐতিহাসিক এই সীতা মন্দিরে বিগত ২৫ বছর ধরে ভক্তরা আসছে। সীতা মন্দির, শম্ভুনাথ মন্দির, কালি মন্দির সহ মা সীতার বিভিন্ন ঐতিহাসিক নির্দশন দেখছেন ভক্তরা। মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. রতন কান্তি বিশ্বাস জানান, এই মন্দিরে মা সীতার অনেক নির্দশন আছে। মা সীতা যে ঘাটে স্নান করতেন আজ সে ঘাটে ভক্তরা স্নান করেছেন। মা সীতা মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী জ্যোতির্ময়ানন্দ পুরি মহারাজ বলেন, এটা সনাতনী সম্প্রদায়ের জন্য একটি পবিত্র তীর্থ স্থান। এখানে মা সীতা মন্দিরের পাশাপাশি দেবাদিদেবের মন্দির, কালি মন্দির এবং গঙ্গা মন্দির আছে। এই মন্দিরের উন্নয়নের জন্য আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
এদিকে, মহা বারুনী স্নান উপলক্ষে মন্দির পরিচালনা কমিটির আয়োজনে মন্দির প্রাঙ্গনে এদিন বেলা ১২ টায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের হিন্দু ধর্মীয় কল্যান ট্রাস্টের ট্রাস্টি পরিমল কান্তি শীল বলেন, ঐতিহাসিক সীতা দেবী মন্দির সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি পবিত্র তীর্থস্থান। এখানে অনেক কাজ বাকি আছে। আশা করছি বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে ধর্মীয় বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে আমরা এই মন্দিরের উন্নয়ন করবো। মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি সমলেন্দু বিকাশ দাশের সভাপতিত্বে এবং কাপ্তাই প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক ঝুলন দত্তের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা বিএনপি নেতা ডা রহমত উল্লাহ, দিলদার হোসেন, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন ফ্রন্টের জিকু কুমার দে, রাঙামাটি জেলার নন্দিতা দাশ, সান্টু চৌধুরী, রুপক কান্তি মল্লিক, পুলক শীল, কাপ্তাইয়ের পুজা উদযাপন কমিটির দীপক কান্তি ভট্টাচার্য, প্রিয়তোষ ধর পিন্টু, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ, রাঙামাটির অজয় সেন ধনা, কাপ্তাইয়ের বাবুল কান্তি দে, রাঙামাটি হিন্দু কল্যান ট্রাস্টির আশীষ কুমার চৌধুরী, কাপ্তাই জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের উৎপল ভট্টাচার্য, কাপ্তাই উপজেলা যুবদলের ইব্রাহিম হাবিব মিলু।
কাপ্তাইয়ে মহা বারুনী স্নান সম্পন্ন

সংবাদটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন
একটি মন্তব্য করুন