মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই (রাঙামাটি): কাপ্তাইয়ে বিভিন্ন আম বাগানে আমের মুকুলে ছেঁয়ে গেছে। আমের মুকুলের সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই দেখা যায় সারি সারি আম বাগানের গাছে গাছে সোনালী রং ধারণ করতে শুরু করেছে আমের মুকুল। চাষীরাও গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। এবার আম গাছে ভালো মুকুল আসায় আমেরও ভালো ফলনের আশা করছে স্থানীয় চাষীরা।
কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের সাফছড়ি এলাকার আমচাষী সুনিল তনচংগ্যা, জ্ঞান তনচংগ্যা সহ কয়েকজন চাষীর সাথে আলাপকালে তারা জানায়, বিগত বছরের তুলনায় এবার মাস খানেক আগে থেকেই আমের মুকুলের দেখা মিলেছে। এছাড়া আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর গাছে ব্যাপক পরিমাণ মুকুল এসেছে। তবে আবহাওয়ার পরিস্থিতি যদি ভালো থাকে তবে আমের ফলন অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক ভালো হবে বলে তাদের আশা। চাষীরা জানান, দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় পার্বত্যাঞ্চলে রূপালী জাতের আমের চাহিদা অনেক বেশি। গত বছরও তারা আম্রপালী বিক্রয় করে লক্ষাধিক টাকা আয় করেছেন। আম্রপালী খেতে খুব সুস্বাদু। তাই তারা প্রত্যেকেই বাগানে আম্রপালী গাছের চাষ বেশি করে আসছেন।
কয়েকজন চাষী জানান, গত বছরের তুলনায় এবার পরিচর্যা খরচ তাদের অনেক বেশি বহন করতে হচ্ছে। বিশেষ করে কীটনাশক, সেচের খরচ আর শ্রমিকদের মজুরী বেড়ে যাওয়ায় আম চাষিদের দুশ্চিন্তা বেড়ে গেছে। এতে আমের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা করছেন তারা।
এদিকে, শিক্ষকতার পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে শখের বসে আম বাগান করে আসছেন মধু মঙ্গল তনচংগ্যা। তিনি জানান, তার বাগানে রাইখালী কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট থেকে সংগ্রহ করা দেশীয় বারি-১, বারি-২, বারি-৩, বারি-৪ এবং বারি-৮ জাতের আম গাছ রয়েছে। গাছগুলোতে বর্তমানে ভালোই আমের মুকুল দেখা দিয়েছে। গতবছর ভালো ফলন না পেলেও এবার মুকুল অনুযায়ী ভালো ফলনের আশা করছেন তিনি। তার বাগানে দেশীয় জাতের পাশাপাশি বিদেশী জাপানী জাতের বিখ্যাত এবং মূল্যবান মিয়াজাকি আম গাছের চারাও রোপণ করেছেন। এছাড়া আমেরিকান রেড আইভরী জাতের আম গাছের চারাও তার বাগানে রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবছর প্রতিটি আম গাছে ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।
এবিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ ইমরান আহমেদ জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাপ্তাই উপজেলার পাহাড়ী অঞ্চলে উৎপাদিত এসব আমের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন জেলার মামুষ কাপ্তাই থেকে ব্যাপক পরিমাণ আম সংগ্রহ করে থাকে। বর্তমান সময় পর্যন্ত আবহাওয়া পরিস্থিতি ভালো থাকায় আমের ভালো ফলন হবে বলে আমরাও আশা করছি। বিশেষ করে বর্তমানে আমের মুকুল থেকে গুটি আসার আগ পর্যন্ত এসময় গাছের বেশ পরিচর্যা করতে হয়। কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে আম চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ এবং পর্যবেক্ষন করে সহযোগীতা করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, এবছর কাপ্তাইয়ের আম চাষীরা আমের ভালো ফলন পাবে এবং লাভবান হবে।