শফিউল আলম রাউজানঃ ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্যা গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও বিএনপির চট্টগ্রাম উত্তর জেলার আহাব্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য ও রাষ্টদূত গোলাম আকবর খোন্দকার মাঠে সাংগঠনিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। দুই প্রার্থী দলের মনোনয়ন পেতে জেলা ও কেন্দ্রের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কাছে ব্যপক তদবীর চালিয়ে যাচ্ছে।
দুই প্রার্থী ও তাদের অনুসারিরা পৃথক পৃথক ভাবে রাউজানে সভা সমাবেশ ও ইফতার মাহাফিল আয়োজোনের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের চান্দা করতে ও সাধারন মানুষের মন জয় করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গত ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন সিকদার ও মননয়ন পেতে তদবির চালিয়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে জামায়েত ইসলাম বাংলাদেশ চট্টগ্রাম ৬ রাউজান আসনে জামাত নেতা শাহজাহান মজœুকে দলীয় প্রার্থী ঘোষনা করেন। জামায়েত প্রার্থী শাহাজাহান মজœুর পক্ষে মাঠে দলীয় নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে জামাত ইসলাম ও রাউজানে সভা সমাবেশ ইফতার মাহাফিল করে সাধারণ মানুষের মন জয় করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম ৬ রাউজান আসনে গত ১৯৭০ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের প্রার্থী মরহুম একেএম ফজলুল কাদের চৌধুরী কে পরাজিত করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মরহুম অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ সংসদ সদস্যা নির্বাচিত হয়। পরবর্তি ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের তৎকালীন ভাষানী ন্যাপ প্রার্থী সাবেক মত্রী মরহুম আবদুল্লাহ আল নোমান কে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়।
১৯৭৯ সালে সংসদ নির্বাচনে তৎকালিন মুসলিম লীগ প্রার্থী মরহুম সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী আওয়ামি লিগ প্রার্থী মরহুম আবদুল্লা আল হারুন কে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। রাউজান রাংগুনিয়া দুই আসন থেকে সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় রাংগুনিয়া আসন রেখে রাউজান আসন ছেড়ে দেয়। পরবর্তি উপ-নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মরহুম জহির উদ্দিন খান তৎকালিন মুসলিম লীগ প্রার্থী বর্তমানে বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী কে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়।
১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী কে পরাজিত করে জাতীয় পার্টি প্রার্থী মরহুম সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। ১৯৮৮ সালের সংসদ নির্বাচনের সাবেক মন্ত্রী জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী মরহুম জিয়া উদ্দিন আহাম্মদ বাবলু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে তৎকালিন এনড়িপি প্রার্থী মরহুম সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মরহুম আব্দুল্লাহ আল হারুন কে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে বিনা প্রতিধন্ধীতায় বিএনপির প্রার্থী গোলাম আকবর খোন্দকার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। ঐ সময়ে কয়েক দিনের ব্যাবধানে সংসদ ভেঙ্গে দেয়। পরবর্তি ১৯৯৬ সালে সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য কারাগারে আটক এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী কে পরজিত করে বিএনপির প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়।
২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বিএনপি প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী কে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী কে পরাজিত করে আবারো আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী কে সংসদ নির্বাচিত হয়। পরবর্তী ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বিএনপির প্রার্থী কে পরাজিত করে সংসদ নির্বাচিত হয়। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী জসিম উদ্দিন সিকদার কে পরাজিত করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়।
২০২২ সালের সংসদ নির্বাচনে ইসলামি ফ্রন্ট প্রার্থী আসম জাফরুল্লাহ সহ সতন্ত্র-১ প্রার্থী কে পরাজিত করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এমিএম ফজলে করিম চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়।
আগামী ত্রয়দশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির তিন প্রার্থী ও জামায়েতে ইসলামের-১ প্রার্থী মাঠ চষে বেরালে ও আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী ও তাদের কোন সাংগঠনিক তৎপরতা মাঠে নেই।
গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী গ্রেপতার কারাগারে আটক রয়েছে। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা আত্মগোপনে রয়েছে।