শতাধিক পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ, টিসিবি ট্রাকসেল বন্ধের প্রতিবাদে এবং যৌক্তিক সংস্কার করে নির্বাচনের কালবিলম্ব না করার দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা শাখা সমাবেশ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেল ৪ টায় নগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে অনুষ্ঠিত হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা শাখার সমন্বয়ক ও বাসদ ইনচার্জ আল কাদেরী জয়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি কমরেড অশোক সাহা, বাসদ (মার্ক্সবাদী) চট্টগ্রাম জেলা সদস্য জাহেদুন্নবী কনক। পরিচালনা করেন বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সদস্য আহমদ জসীম।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “গণভ্যুত্থানে জনগণের আত্মত্যাগ ও প্রত্যাশা নিয়ে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার তৈরি হয়েছে। কিন্তু সরকারের একের পর এক সিদ্ধান্ত সেই প্রত্যাশার পথে হোঁচট খাচ্ছে। শতাধিক পণ্যের উপর শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করার ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে এবং দৈনন্দিন জনজীবনের উপর আরো চাপ সৃষ্টি হবে। একইভাবে টিসিবি ট্টাকসেল বন্ধ করে ও ৪৩ লাখ টিসিবি কার্ড বাতিল করার কোটি মানুষ বিপন্ন হয়ে পড়বে। অথচ সরকার ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না,বাজার সিন্ডিকেট ভেঙ্গে টিসিবকে সক্রিয় করবার দৃশ্যমান কাজ করতে পারছে না। এর ফলে গরীব, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তে মানুষের আয়ের চেয়েও ব্যয়বৃদ্ধি অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরি করছে।অন্যদিকে সংবিধান সংস্কার, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক, জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা নিয়ে অনাহুত বিতর্ক ও বিভ্রান্তি তৈরি করে জনমনে অনাস্থা ও অভ্যুত্থানের চেতনাকে ম্লান করে দিচ্ছে। এই সুযোগ দেশের অভ্যন্তরে উগ্র সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী শক্তি এবং যুদ্ধাপরাধের সাথে যুক্ত জামাত শিবির মাথাচাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃতি করার সুযোগ নিচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন,” সংবিধান কোনো ধর্মগ্রন্থ নয় যে সেটা পাল্টানো যাবে না।কিন্তু পাল্টানো বা পুনরুল্লেখ করবার নাম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মৌলচেতনাকে অস্বীকার করা হবে গণভ্যুত্থানের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। তাই এধরণের বক্তব্য ও উদ্দেশ্য থেকে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সরে আসা উচিত। ”
সমাবেশে বক্তারা জুলাই গণভ্যূত্থানের নিহতদের ক্ষতিপূরণ,আহতদের পূর্ণবাসনসহ হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত শেখ হাসিনা এবং অন্যান্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। একইসাথে যৌক্তিক সংস্কার করে অবিলম্বে নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠির হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।