‘বেগম রোকেয়া দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, চট্টগ্রাম জেলার নারীসেলের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বক্তারা বলেন, নারীর অগ্রযাত্রাকে পেছন থেকে টেনে ধরার চেষ্টা করে যেসব রক্ষণশীল, উগ্রবাদী গোষ্ঠী, তাদের বিরুদ্ধে সিপিবির লড়াই অব্যাহত থাকবে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর হাজারী লেইনে সিপিবির জেলা কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সদস্য ও নারীসেলের আহ্বায়ক রেখা চৌধুরী। সভার শুরুতে বেগম রোকেয়ার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের পাশাপাশি তাঁর স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।
সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সহ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৃণাল চৌধুরী, জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক অশোক সাহা, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, সম্পাদকদণ্ডলীর সদস্য মছিউদদৌলা, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, জেলা কমিটির সদস্য সিতারা শামীম, নাসরিন জাহান রেশমী এবং অনিন্দ্য সৃজন শুভ্র।
সভায় সিপিবি নেতারা বলেন, ‘রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন এই উপমহাদেশের তথা বিশ্বের একজন নারীবাদী, চিন্তক, দার্শনিক ও লেখক। শুধু নারীসমাজের জন্য নয়, নারী-পুরুষ সকলকে নিয়ে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা ছিল রোকেয়ার মধ্যে। আজকের সমাজ, নারীসমাজ এবং রাষ্ট্র তাঁর ভাবনাকে গ্রহণ করেছে, তবে সেটা বাস্তবায়নে আমাদের আরও অনেকদূর যেতে হবে। আমরা বৈষম্যমুক্ত সমাজের কথা ইদানিং অনেকবেশি বলছি-শুনছি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, সমাজের বড় অংশ যারা, সেই নারীসমাজ অনেকবেশি বৈষম্যের শিকার। সমাজের বৃহত্তর অংশকে বৈষম্যের মধ্যে রেখে দেশ ও জাতির এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি একটি সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা, নারীপুরুষ সবার জন্য সমতাভিত্তিক একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সব ধরনের শোষণ, বৈষম্য, বঞ্চনার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। আমরা মনে করি, নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা, তাদের প্রতি সহিংসতা এবং বৈষম্য দূর করার দায় সর্বাগ্রে রাষ্ট্রের। আমরা এখনও রাজনৈতিকভাবে, গোষ্ঠীবদ্ধভাবে, সংঘবদ্ধভাবে নারীর অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধাচরণ দেখতে পাই। নারীকে পেছনে টেনে রাখার চেষ্টায় থাকে সমাজের রক্ষণশীল, পশ্চাদপদ, উগ্রবাদী গোষ্ঠী। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। এসব নারীর অগ্রযাত্রা বিরোধী উগ্রগোষ্ঠীকে রাষ্ট্র যেন কোনোভাবে পৃষ্ঠপোষকতা না দেয়, সেই লড়াই আমরা চালিয়ে যাব।’