সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে আসা জাহাজ নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এই জাহাজটা মিডল ইস্ট থেকে আসছে। সেখান থেকে এসে একটা দেশে গেছে সেখান থেকে আমাদের দেশে আসছে। আমাদের দেশে কোনো দেশের জাহাজ আসা নিষিদ্ধ আছে? আমরা কি কারো কাছে বন্দি যে শুধু তাকেই সেবা করবো? আমার দেশ সবার উপরে। খেজুর, পেঁয়াজ, আলু-এগুলো সামনের রোজার সময় দরকার। এগুলো কি আমরা আসতে দিবো না? যারা এগুলো রটাচ্ছে তারা আমাদের শত্রু। ভুল হলে ধরে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমাদের যে ভুল হয় না, তা না। আমাদের ভুল হলে ধরিয়ে দেবেন। আমার একটা অনুরোধ, মিথ্যা সংবাদ দিবেন না। যেটা ঘটে নাই, ওইটা বলবেন না।
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, পার্শ্ববর্তী দেশের মিডিয়া মিথ্যা প্রচার করছে। আপনাদের কাছে অনুরোধ-মিথ্যা সংবাদ দিবেন না।
এতে পার্শ্ববর্তী দেশ সুবিধা পেয়ে যায়। আমাদের দেশের মিডিয়ার যে একটা সুনাম আছে, পার্শ্ববর্তী দেশের মিডিয়ার কিন্তু কোনো সুনাম নাই। তারা মিথ্যাটাই প্রচার করে বেশি। আর এটা কিন্তু কাউন্টার করতে পারেন আপনারাই (সাংবাদিক)।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে নগরের দামপাড়া চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সরকার পতন পরবর্তী হওয়া বিভিন্ন মামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভুয়া মামলায় কাউকে হেনস্তার শিকার না হয়, সেদিকে সরকার সজাগ রয়েছি। এ সম্পর্কে বিজ্ঞাপন দিয়েছি বিভিন্ন মিডিয়ায়। একচুয়াল মামলা হলে আপনারে ধরার কথা। এরকম যাদের আছে কাউকে কি ধরা হইছে? মামলা তো পুলিশ, র্যাব, আর্মি, আনসার দেয়নি। পাবলিক দিয়েছে। এজন্য আপনি যে কোনো হেনস্তার শিকার হননি এজন্য আমাদের আরও ধন্যবাদ দেওয়ার কথা। আগে ভুয়া মামলা করতো পুলিশ। তারা ১০টা নাম আর ৫০টা বেনামি আসামি দিতো। এখন জনগণ দিচ্ছে ১০টা নাম ৫০টা বেনাম।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোন সময় ভালো ছিল? আপনারা বলেন? এই যে একটি পূজা গেল, পূজাটি কতো সুন্দরভাবে হয়ে গেল। আজ আমরা একটি মতবিনিময় সভা করেছি। বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিভাবে আরও উন্নতি করা যায় এ ব্যাপারে আলাপ হয়েছে। এ ব্যাপারে আপনাদের সাহায্য এবং সহযোগিতা চাই। পরিস্থিতির অবশ্যই উন্নতি হবে। পুলিশের মনোবল আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রাফটা নিচের দিকে নেমে গেলে খারাপ। গ্রাফটা কিন্তু আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠেছে। মনোবল দুইদিনে চেঞ্জ হয় না। একটু সময় লাগে। আপনারা সময় না দিলে এটা সম্ভব না। আমার কাছে জাদুর মতো কিছু নাই যে বললেই সব হয়ে যাবে।
যোগদান না করা পুলিশ সদস্যরা আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা জয়েন করেনি তারা আমাদের চোখে ক্রিমিনাল। তাদের আইনের আওতায় অবশ্যই আনা হবে।
জুলাই হত্যাকাণ্ডে চট্টগ্রামে অন্তত ৫০ জন অস্ত্রধারীকে চিহ্নিত রয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে সিএমপি শুধু একজন এবং র্যাব চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এমনকি অস্ত্রও উদ্ধার করা যায়নি, সাংবাদিকের দেওয়া এমন তথ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশ কমিশনার ও র্যাবের অধিনায়ককে তাদের তালিকা করে গ্রেপ্তার করার তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন।
এ সময় পুলিশের আইজিপি ময়নুল ইসলাম, র্যাবের ডিজি অতিরিক্ত আইজিপি একেএম শহিদুর রহমান সহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।