হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন প্রসঙ্গে
২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী পার্শ্ববর্তী ভারতে পলায়নের পর দেশের জনগণ নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। সীমাহীন চ্যালেঞ্জ সামনে নিয়ে দেশের কঠিন মুহূর্তে ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। জরাজীর্ণ দেশকে সংস্কারের লক্ষ্য নিয়ে সরকারের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। সরকারের দুই মাস যেতে না যেতে বিভিন্ন সংগঠন তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে উত্থাল রয়েছে। এরি মধ্যে অনেকের দাবি-দাওয়া পূরণ করা সম্ভব হলেও কতিপয় অলীক দাবি কখনো পূরণ করা সম্ভব হবে না বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। সরকার যখন চ্যালেঞ্জ নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তখন দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে কিছু কিছু সংগঠন সোচ্চার হয়ে উঠেছে। সরকারের প্রাথমিক সাফল্যের মধ্যে রয়েছে রিজার্ভে উর্ধগতি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি, সাংবিধানিক সংস্কার, গণহত্যার বিচারের জন্য ট্রাইবুনাল পুনর্গঠন ইত্যাদি।
নতুন সরকার যখন ক্রমান্বয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সচেষ্ট হয়েছে তখনই কিছু অসাধু মহল নিজেদের দাবি-দাওয়ার নাম দিয়ে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পায়তারা করছে। তন্মধ্যেই উল্লেখযোগ্য হলো হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন। বিশ্লেষকদের ধারণা স্বাধীনতা পরবর্তী যেকোনো সময়ের চেয়ে এই সময়ে হিন্দুরা সবচেয়ে নিরাপদে রয়েছে । কোন কারণ ছাড়া তারা অহেতুক দাবি-দাওয়া নিয়ে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দুদের অধিকার সংরক্ষণ নামে তারা বিভিন্ন জায়গায় মিটিং মিছিল সহ বিভিন্নভাবে জড় হচ্ছে। নিজেদের পতাকা বাংলাদেশের পতাকার উপর উড্ডয়ন করে জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করা হয়েছে।
পার্শ্ববর্তী হিন্দু রাষ্ট্র ভারতের দিকে যদি তাকাই ভারতের জনসংখ্যার প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ মুসলিম হওয়া সত্বেও তারা চাকরিতে এক পারসেন্ট মাত্র সুযোগ পেয়ে থাকে। ভারতে মুসলিম নির্যাতন অহরহ ঘটে চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ৪৫০ টি মুসলিম পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। অপরাধ হচ্ছে শুধুমাত্র তারা সংখ্যালঘু মুসলিম। হিন্দুদের উপর কোন জুলুম নির্যাতন না হওয়া সত্বেও তারা কিসের দাবি-দাওয়া নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করছে তা কারো বোধগম্য নয়। বাংলাদেশে প্রায় হিন্দু রয়েছে ৭ থেকে ৮%। চাকরিতে তাদের অবস্থান হচ্ছে সমুদয় চাকরি ৩৬ পার্সেন্ট। তবু বৈষম্যের প্রোপাগান্ডা তোলে তারা কি বুঝাতে চাচ্ছে তা বোধগম্য নয়।বিগত দুর্গাপূজায় কোন ধরনের ষড়যন্ত্র বিশৃঙ্খল পরেশ সৃষ্টি না হওয়া সত্ত্বেও তারা নিজেদের অধিকার সংরক্ষণ নামে ভুয়া স্লোগান তোলে দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে অহরহ হিন্দু নির্যাতনের কথা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেদারসে প্রকাশিত হয়েছে। তখন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনের কোন নড়াচড়া দেখা যায়নি। এমনকি বিশ্বজিৎকে যখন শিবির ট্যাগ দিয়ে হত্যা করা হয় তখনও তাদের প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে দেখা যায়নি । কোন দল কিংবা দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন সোচ্চার হয়েছে তা কারো বোধগম্য নয়।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন ইসকন কোন ধর্মীয় দল নয় তারা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে মাঠে সোচ্চার হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত যারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা। কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করা। তাহলেই দেশ স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাবে। যে কেউ ঠুনকো দাবী নিয়ে হুমকি প্রদান করতে পারবে না। সময়ের প্রত্যাশিত দাবী হলো হিন্দুত্ববাদী উগ্র সংগঠন ইসকনকেই দ্রুত আইনের আওতায এনে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করা। তা না হলে তারা অধিকার সংরক্ষণ নাম দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল পরিবেশের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সচেষ্ট থাকবে। সুতরাং জনগণের প্রত্যাশা ও দাবি হিন্দুত্ববাদী উগ্র সংগঠন ইসকনকে কঠিন হস্তে মোকাবেলা করা এবং আইনের আওতায় নিয়ে আসা।