শ্রমিক হত্যার বিচার, নিত্যপণ্যের দাম কমানো, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি এবং নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার বিক্ষোভ।
শ্রমিক হত্যার বিচার, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রেশন ব্যবস্থা চালু, আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনজীবনে শান্তি, সর্বত্র সম্প্রীতি রক্ষা, দুর্নীতি-লুটপাট-দখলদারিত্ব বন্ধ, পাচারের টাকা-খেলাপী ঋণ আদায়, শ্রমিকের জাতীয় ন্যূনতম মজুরি, কৃষক-ক্ষেতমজুরের স্বার্থে নীতি প্রণয়ন, সবার জন্য কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য-শিক্ষার নিশ্চয়তা, কালাকানুন আইন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন প্রবর্তন, নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারসহ গণতান্ত্রিক সংস্কারের আলোচনা শুরু, নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যবাদী আগ্রাসন রুখে দাঁড়ানোর দাবিতে শুক্রবার বিকাল ৪.০০ টায় চেরাগী চত্বরে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সমাবেশ পরবর্তী মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সিপিবি, চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অশোক সাহা’র সভাপতিত্বে এবং জামাল উদ্দীনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৃণাল চৌধুরী, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য উত্তম চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া, নারী নেত্রী রেখা চৌধুরী, সিপিবি কোতোয়ালী থানার সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, যুব নেতা রাশিদুল সামির প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দেশবাসী স্বৈরাচারী ব্যবস্থাকে উৎখাত করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে আশুলিয়ায় শ্রমিকের বুকে গুলি করা হলো। গণ–অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে শ্রমিক–জনতা এমন আচরণ আশা করেনি। অবিলম্বে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে শিল্পাঞ্চলে শান্তি বজায় রাখা এবং শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করতে হবে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের জানমালের নিরাপত্তা, নির্বিঘ্নে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের বিষয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন এলাকায়, পার্বত্য এলাকায় যে হত্যাকাণ্ড ভাঙচুর সংগঠিত হলো তা মানুষকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। তাই সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়ে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করতে হবে। অনতিবিলম্বে রাজনৈতিক দল সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে কথা বলে নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রবর্তনের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, অর্থনীতির দুর্বৃত্তায়ন অব্যাহত রেখে ভালো রাজনীতি আশা করা যাবে না। গণঅভ্যুত্থানের কোন দল বা গোষ্ঠী বিজয়ী হয়নি, অথচ দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে দখলদারী, চাঁদাবাজির হাত বদল হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দখলদারিত্ব চাঁদাবাজি থেকে দেশকে মুক্ত করে ভয়ের রাজত্বের অবসান ঘটাতে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা দৃশ্যমান হচ্ছে না। এখনো নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। তাই অনতিবিলম্বে বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। বিদেশে পাচারকৃত টাকা দ্রুত ফেরত আনা, ঋণখেলাপীদের কাছ থেকে টাকা আদায়সহ দুর্নীতি-লুটপাটের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা গ্রহন করতে হবে।
সভায় বক্তারা, দেশের উপর সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য শক্তির হস্তক্ষেপের বিষয়ে দেশবাসীকে সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়। গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় স্বৈরাচারী ব্যবস্থার উচ্ছেদ ও বৈষম্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।