৫ আগষ্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির রাজনীতিতে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পর এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে এলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি-সম্পাদক।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ২৪ দফা দাবি জানিয়ে ছাত্রশিবির চবি শাখা সভাপতি নাহিদ ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহিম এক বিবৃতির মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসেন।
জানা গেছে, চবি শিবিরের সভাপতির নাহিদ ইসলাম ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহিম মার্কেটিং বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি মহান আল্লাহর দরবারে। যাঁর অশেষ মেহেরবানিতে দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শক্তির জুলুম-নির্যাতন থেকে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে। দুরুদ ও সালাম পেশ করছি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর, যাঁর সুমহান আদর্শ পৃথিবীর সকল মানুষের একমাত্র মুক্তির পথ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাসে শাহাদাৎ বরণকারী বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১০ জন শহীদ ভাইসহ ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে শাহাদাৎ বরণকারী সকল শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি এবং শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করছি, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা। পাশাপাশি আহত এবং পঙ্গুত্ববরণকারী সকলের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ উন্নয়নে অন্তবর্তীকালীন সরকার সৎ, দক্ষ ও যোগ্য উপাচার্য, উপউপাচার্য নিয়োগ দেওয়ায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, চবি শাখার পক্ষ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলীকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
তারা আরও বলেন, শহীদ হৃদয় তরুয়া, শহীদ ফরহাদসহ অসংখ্য শহীদের রক্তে অর্জিত এই স্বাধীন দেশে শিক্ষার্থীদের অধিকার, বাকস্বাধীনতা, দুর্নীতি ও শিক্ষকদের রোষাণলমুক্ত একটি ক্যাম্পাস উপহার দেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন—এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা। শিক্ষার মানোন্নয়ন, মেধাবীদের মূল্যায়নসহ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সকল দাবি বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কেবল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করা সম্ভব। ফ্যাসিবাদের আমলে নিয়মে পরিণত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অন্যায় এবং অনিয়মের ইতি টানার সময় এসেছে। আর তাই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে আমরা চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানকে ধারণ করে ২৪ দফা দাবি উত্থাপন করছি।
উক্ত বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উপরোল্লিখিত দাবিসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি ও বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণে প্রশাসনের আন্তরিক সদিচ্ছা ও সাহসী পদক্ষেপ জরুরি। তবেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিক, মানসম্মত, শিক্ষার্থীবান্ধব ও যুগোপযোগী হয়ে উঠবে বলে আমাদের বিশ্বাস।