হাসপাতালে রহস্যময় মৃত্যু হয়েছে ওড়িশার বিখ্যাত গায়িকা রুকসানা বানোর। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ২৭ বছর। মৃত্যুর কারণ হিসেবে গায়িকার ‘স্ক্রাব টাইফাস’ রোগকে প্রথমে দায়ী করা হলেও এখন তা মোড় নিয়েছে সুপরিকল্পিত হত্যার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের ভুবনেশ্বরের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন রুকসানা। তিনি দীর্ঘদিন ‘স্ক্রাব টাইফাস’ রোগে ভুগছিলেন। তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়, এ রোগের কারণেই বুধবার ( ১৮ সেপ্টেম্বর) মারা গেছেন রুকসানা। কিন্তু এখন বিষয়টি মোড় নিয়েছে ‘অস্বাভাবিক মৃত্যুতে’।
রোগটি সম্পর্কে কলকাতার আমরি হাসপাতালের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রুদ্রজিৎ পাল বলেন, আসলে স্ক্রাব টাইফাস (Scrub Typhus) হলো একটি জুনোটিক ডিজিজ। যে ব্যাকটেরিয়া পশু থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে।
এ রোগে রোগীর জ্বর আসে এবং সঠিক সময়ে অ্যান্টিবায়োটিক দিলেই রোগটি থেকে মুক্তি সম্ভব। তাই গায়িকার পরিবার বলছে, স্ক্রাব টাইফাস রোগে মারা যাননি রুকসানা, বরং বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে রুকসানার মা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করেছেন, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে তার মেয়েকে।
রুকসানার বোন রুবি বানো সংবাদমাধ্যমে জানান, ১৫ দিন আগে শুটিং চলাকালীন জুস পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুকসানা। এরপর থেকেই শারীরিক অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যেতে শুরু করে তার।
বোন রুবি বানো আরও বলেন, ‘২৭ আগস্ট প্রথম ভবানীপাটনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসার পর রুকসানাকে বালাঙ্গীরের ভীমা ভাই মেডিকেল কলেজে রেফার করা হয়।
শারীরিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে গেলে বাদগাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবশেষে রুকসানাকে ভুবনেশ্বরের এই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তার।’
রুকসানার পরিবারের দাবি, পশ্চিম ওড়িশার একজন প্রতিদ্বন্দ্বী গায়ক অসংখ্যবার রুকসানাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। ওই গায়কই বিষপ্রয়োগ করে মেরেছে গায়িকাকে। তাই পুলিশের কাছে রুকসানার মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন তারা।
এ পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে কতর্ব্যরত পুলিশ ও মেডিকেল টিম রুকসানা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করছে। কারও সঙ্গে পেশাগত শত্রুতা ছিল কি না সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তারা। সোশ্যাল মিডিয়া ও মোবাইল ফোনের রেকর্ড নিয়েও চলছে তদন্ত কার্যক্রম।