পরিকল্পিত একটি আবাসন প্রকল্প ছিন্নমূল অসহায় মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে যোগ করছে নতুন মাত্রা। খাগড়াছড়ির বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব আবাসন প্রকল্পে ৬০টি পরিবার পেয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) প্রকল্পটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পাখির চোখে দেখলে প্রকল্পটি মনে হতে পারে কোনো আবাসিক রিসোর্ট। জেলা শহরের অদূরে শালবনের রসুলপুর এলাকায় ৫ একর জায়গায় ১৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ এ প্রকল্পটি নির্মাণ করেছে। প্রতিটি পরিবারের আবাসনে গড়ে খরচ হয়েছে ২৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, দৃষ্টিনন্দন এই আবাসন প্রকল্পে সুপেয় পানি, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, সৌর বিদ্যুৎ ও পুকুরসহ পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধা রয়েছে। প্রধান সড়কের সঙ্গে প্রশস্ত একটি সড়ক এসে মিশেছে আবাসন প্রকল্পে। সেখান থেকে ছোট সড়ক পৌঁছেছে প্রতিটি ভবনের প্রধান ফটকে। পাহাড়ের চূড়ায় ১৫টি আবাসিক ভবন। দোতলা বিশিষ্ট প্রতি ভবনে ৪টি করে পরিবার বসবাস করবে।
খাগড়াছড়ি পৌর সভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. রেজাউল করিম জানান, পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসনের দাবি দীর্ঘদিনের। শালবন এলাকার ঝুঁকিতে থাকা কিছু পরিবারকে এ আশ্রয় কেন্দ্রে পুনর্বাসনের কথা জানান এ কাউন্সিলর। তিনি জানান, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড থেকেই সুবিধাভোগী বাছাই করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, ‘আমরা ১৫টি ভবন নির্মাণ করেছি। এখানে ৬০টি পরিবার থাকতে পারবে। রাজনৈতিক পরিচয়কে প্রাধান্য দেয়া হবে না। যারা প্রতিবন্ধী, গরিব ও দুঃস্থ – তারাই প্রাধান্য পাবে।
তিনি আরও জানান, এ প্রকল্পে বসবাসরত শিশুদের জন্য আলাদা শিক্ষকও থাকবে। এটি পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা। এখানে আশ্রিতদের জন্য বিদ্যুৎ ও সোলার প্যানেল স্থাপনসহ নাগরিক নানা সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি আত্মকর্মসংস্থানে সম্পৃক্ত করতে সেলাইসহ জীবিকার দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, শিশুদের লেখাপড়ার জন্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এখানকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জোনায়েদ কবির সোহাগ জানান, ‘ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করতে জেলা প্রশাসন প্রস্তুতি সভা করে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার পরপরই আমরা ঘরের চাবি হস্তান্তর করব।’