খুলছে বঙ্গবন্ধু টানেল
উদ্বোধনের অপেক্ষায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল। যা কিনা দক্ষিণ এশিয়া ও দেশে নদীর তলদেশে নির্মিত প্রথম টানেল। পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ দেশের যোগাযোগব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে যা রাখবে অভূতপূর্ব ভূমিকা। পাল্টে যাবে বন্দরনগরীখ্যাত চট্টগ্রাম। এদিকে টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে শুক্রবার রাতে (২৮ অক্টোবর) দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর নির্মাণে জড়িত সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বাংলাদেশের জন্য এক গৌরবোজ্জ্বল ও স্মরণীয় দিন। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’- এর শুভ উদ্বোধন আজ। উচ্চপ্রযুক্তিসম্পন্ন এ প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত সর্বস্তরের দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী, পরামর্শক, বিশেষজ্ঞ প্যানেল, সেতু বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিরাপত্তা তদারকিতে নিয়োজিত বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং নির্মাণ শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে তাদের অবদান ও অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য অভিবাদন জানাই। টানেলের দুই প্রান্তে ভূমি অধিগ্রহণ কাজসহ নানাভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করায় সংশ্লিষ্ট জনগণ, জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি দেশবাসীকেও আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। বাণীতে তিনি আরও বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র ৩ বছর ৭ মাস ৩ দিন রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করেন। পাক হানাদার বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের সময় ২৭৮টি রেলব্রিজ এবং ২৭০টি সড়কব্রিজ ধ্বংস করে। জাতির পিতা যুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত সড়ক, সড়ক-সেতু, রেল, রেল-সেতু নির্মাণ এবং মেরামতের করে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দেশের পরিবহন ও যোগাযোগ খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের জন্য যোগাযোগ অবকাঠামো পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে উন্নয়নযাত্রার সূচনা করেছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে গত প্রায় ১৫ বছরে যোগাযোগ খাতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। সড়ক, মহাসড়ক, সেতু, এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভারসহ দেশব্যাপী নির্মিত অবকাঠামো বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে ‘ওয়ান সিটি, টু টাউন’ বিষয়টির সুফল মিলবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই টানেল দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কে সংযুক্তি, চট্টগ্রাম শহরের যানজট হ্রাস, আনোয়ারা প্রান্তে বিদ্যমান ও গড়ে ওঠা শিল্পাঞ্চল এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশসহ চট্টগ্রাম বন্দর ও প্রস্তাবিত মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরে পণ্য পরিবহনে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে। টানেল চালু হলে বাংলাদেশের জিডিপি প্রায় ০.১৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলেও দাবি করেন তিনি। দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর নিচে প্রথম সড়ক টানেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে নতুন অধ্যায় উন্মোচনের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতার আজীবন লালিত ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ তথা জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো, ইনশাআল্লাহ। সাম্প্রতিক সময়