কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান। শারীরিক অসুস্থতার জন্য সচরাচর কোনো অনুষ্ঠানে তাকে দেখা যায় না। সম্প্রতি তার বাবা প্রখ্যাত মরমী শিল্পী আব্বাসউদ্দিন এর ১২২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আব্বাস উদ্দিন একাডেমি আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হয়ে এসেছিলেন। সেখানেই কথা হয় তার সঙ্গে। কেমন আছেন? উত্তরে তিনি বলেন, ভালোই আছি। তবে শারীরিকভাবে একটু অসুস্থ। বর্তমান প্রজন্মের গান কী শোনা হয়?
ফেরদৌসী রহমান বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন চ্যানেল সংগীত শিল্পী প্রতিভা নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করছে তাদের আমি সাধুবাদ জানাই। এই প্রজন্মের অনেকেই ভালো কাজ করছে। সত্যি বলতে সংগীত হচ্ছে গুরুমুখী বিদ্যা। সাধনা, চর্চা একজন শিল্পীকে সফলতার শীর্ষে নিয়ে যায়।
আমি এর সঙ্গে এও বলতে চাই, আজকাল সবার মাঝে অস্থিরতা কাজ করছে। কণ্ঠের প্রতি তারা যত না যত্নশীল তার চেয়ে পোশাক-আশাকের প্রতি নজর বেশি। আমাদের সময় আঞ্জুমান আরা বেগম, ফরিদা ইয়াসমিন, নীলুফার ইয়াসমিনরা যখন গান করতাম তখন তো এত সুযোগ-সুবিধা ছিল না। আমরা কণ্ঠশিল্পীরা সেই সময় গীতিকার, সুরকার, যন্ত্রশিল্পীদের নিয়ে বসে টিমওয়ার্কের মাধ্যমে গান করতাম। তিনি আরও বলেন, মনে রাখতে হবে সংগীতে শর্টকাট বলে কোনো রাস্তা নেই। চর্চা এবং সাধনা যার যত বেশি, সেই তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। এ শিল্পী আরও বলেন, আমি সংগীত জীবনে কোনোদিন কারও কাছে ব্যক্তিগত অসুবিধার কথা বলিনি। যখনই যে সরকার ক্ষমতায় থেকেছে তারা আমাকে যথেষ্ট সম্মান দিয়েছে। রাষ্ট্রের যারা ক্ষমতায় ছিলেন আমাদের বাসায় আসতেন, আমার বাবার সঙ্গে কথা বলতেন। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু আমাদের বাসায় ওই সময় আসতেন এবং গান শিখতেন। আমার বাবা বঙ্গবন্ধুকে বলতেন মুজিব যেভাবেই হোক বাংলা ভাষাকে বাঁচাতে হবে না হলে কিন্তু বাংলা কৃষ্টি কালচার থাকবে না। আবার মাঝেমধ্যে নৌকায় যেতে যেতে বঙ্গবন্ধু আমার বাবার কণ্ঠে গান শুনতেন। বিটিভিতে শিশুদের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘এসো গান শিখি’- কয়েক দশক আপনি সঞ্চালনা করছেন। বিষয়টা কতোটুকু আনন্দ দিয়েছে আপনাকে? ফেরদৌসী রহমান বলেন, শিশুদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে ভীষণ ভালো লেগেছে। এই অনুষ্ঠান করতে গিয়েই আমি বাংলার আপামর জনগণের কাছে খালামণি হয়ে উঠি। তাই অনুষ্ঠানটি আমার হৃদয়ের অনেক কাছের হয়েই আছে।