বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন বিএনপির জন্ম হয় দেশে তখন রাজনৈতিক শূন্যতা বিরাট করছিল।তখন জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্টা করেছিলেন গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।
আজকে যারা ক্ষমতায় তারা গণতন্ত্রকে জবাই করেছিল, আর জিয়াউর রহমান সেই জবাই করা গণতন্ত্রের গোরস্থানের ওপর থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের বাগান রচনা করেছিলেন। সব রাজনীতির দল বাতিল করে একদলীয় বাকশাল গঠন করেছিল।কিন্তু তারাই পরে টিকতে পারেনি।বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাজনীতি করেছেন এ দেশের মানুষের জন্য।
অবিলম্বে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকারের আমলে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, তা ইতোমধ্যে প্রমাণ হয়ে গেছে।
সাধারণ মানুষ জেগে উঠেছে এবং তারা আমাদের আন্দোলনে যোগ দিচ্ছে। কারণ তারা ক্ষমতার পরিবর্তন চায়। যুগে যুগে মানুষের দাবি কেউ দমাতে পারেনি। এই সরকারও তা করতে পারবে না।
তিনি বলেন,বিএনপি লাশ ফেলার জন্য আন্দোলন করে না, জনগনের দাবি আদায়ে বিএনপি আন্দোলন করে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, জনগণকে দুঃশাসন ও দেশকে লুটের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য বিএনপি আন্দোলন করছে।
তিনি আজ ৩১ আগষ্ট বৃহস্পতিবার বিকেল নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয় চত্তরে বিএনপির প্রতিষ্ঠা প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপনের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির চতুর্থ দিনে নাসিমন ভবন সত্যরে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’র আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন এর উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সংসদ সদস্য এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জনাব গোলাম আকবর খোন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায়
প্রধান বক্তা হিসেবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী এডভোকেট মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন ও কেন্দ্রীয় সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, মানুষ আজ পরিবর্তন চায়। তারা রাস্তায় নেমে এসেছে। জনগণ অবৈধ এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
আওয়ামী লীগ সব সময় উন্নয়নের কথা বলে। কিন্তু তাদের উন্নয়ন হচ্ছে গুটিকতেক মানুষের উন্নয়ন। করোনার সময়ে দেশে ১২ হাজার নতুন কোটিপতি তৈরি হয়েছে। এদের উন্নয়ন করছে সরকার। আর সাম্প্রতিক সময়ে দেশে নতুন করে দরিদ্র সীমার নিচে নেমেছে সাড়ে তিন কোটি মানুষ। সরকার এই সাড়ে তিন কোটি মানুষের নয়। এই মানুষেরা সরকার পরিবর্তন চায়।
তিনি বলেন, কিছু দিন আগেই আওয়ামী লীগ বলেছে বহির্বিশ্বের কেউ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করেনি, অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়ন সরাসরি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি করেছে, এখন কেন আওয়ামী লীগ নেতারা চুপসে গেছে?
দ্রব্যমূল্য প্রতিদিনই বাড়ছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসতে চাইলে আওয়ামী লীগ মানুষকে কষ্ট দিত না। তারা জনগণের ভোট চায় না। ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে এডভোকেট মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, শহীদ জিয়াকে ও তার পরিবারকে গালি না দিলে আওয়ামীলীগের গুম হয় না। তারা শহীদ জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক মানতে চায় না, অথচ তৎকালীন ভারতের রাষ্ট্রপতি সন্দ্বীপ রাড্ডি তাঁর দায়িত্ব পালনকালে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষকের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।
বিএনপিকে গণমানুষের দল বলে উল্লেখ করে তিনি স্বৈরাচার সরকারের পতন না হাওয়া পর্যন্ত বিএনপির পতাকা তোলে থেকে সংগ্রাম করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে গোলাম আদার খন্দকার বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ আমরা গুরুবান্বিত কারণ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এই চট্টগ্রামের মাটি থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সৃষ্টি করেছিলেন এই চট্টগ্রাম থেকে।
আগামী দিনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারুণ্যের অহংকার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে এক দফার দাবি আদায়ের আন্দোলনের অবিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে হবে আমাদেরকে।
তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বারবার হেরেছে এবং বারবার হারবে ইনশাআল্লাহ। এটা জানে বলেই তারা কায়দা কৌশল করে ইলেকশন করতে চায়। জিয়াউর রহমান দেশ ও জনগণের জন্য যা করেছেন, তা নিয়ে কর্মী হিসেবে আমরা যতটা গর্ব করতে পারি। যেটা অন্যকোন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা পারে না। কারণ আমাদের নেতা কখনো দেশ ও জনগণের প্রশ্নে আপোষ করেননি।
উক্ত আলোচনা সভায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উপর গুরুত্ব আরোপ করে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হালিম, অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, আলহাজ্ব ছালাউদ্দিন, মোহাম্মদ নুরুল আমিন, নূর মোহাম্মদ, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়ত হোসেন, সরোয়ার আলমগীর, কাজী মোঃ সালাউদ্দিন, এডভোকেট এম এ তাহের, কর্নেল আজিম উল্লাহ বাহার, মোহাম্মদ সেলিম চেয়ারম্যান, অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, অধ্যাপক কুতুবউদ্দিন বাহার, শহীদুল ইসলাম চৌধুরী, আবু আহমেদ হাসনাত, গিয়াস উদ্দিন চেয়ারম্যান, আলমগীর হোসেন ঠাকুর, কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, গাজী নিজাম উদ্দিন, হাসান মোহাম্মদ জসীম, সরওয়ার উদ্দিন সেলিম, মুরাদ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন, বদরুল আলম, লায়লা ইয়াছমিন, মোহাম্মদ সিদ্দিক, সৈয়দ নাসির উদ্দীন, জাহিদুল আবছার জুয়েল, মনিরুল আলম জনি, শফিউল আলম চৌধুরী, আব্দুল ওহাব কবির চেয়ারম্যান, কাজী সাইফুল ইসলাম টুটুল, মাওলানা রফিক উল্লাহ হামিদী, আশরাফ উল্লাহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।