এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতেছে আফগানিস্তান। চট্টগ্রামে তাই বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ হোয়াইটওয়াশ বাঁচানো। স্বাগতিকদের এমন হতাশ করা পারফরম্যান্সে শেষ ম্যাচে সাগরিকা স্টেডিয়াম থেকে দর্শকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। গতকাল সকাল থেকে মাঠে টাইগার ভক্তদের খুব একটা দেখা যায়নি। অন্যদিকে এমন মান রক্ষার ম্যাচে টসে হেরে বল করতে নেমে জ্বলে উঠলো টাইগার বোলাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিল সফরকারীরা। স্কোর বোর্ডে যোগ করেছিল ৩৩১ রান। কিন্তু তাদেরই শেষ ম্যাচ থেমেছে মাত্র ১২৬ রানে। এই ম্যাচে একাদশে সুযোগ পাওয়া শরিফুল ইসলাম ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। নিয়েছেন ২১ রানে ৪ উইকেট।
এ নিয়ে তৃতীয়বার ৪ উইকেট পেলেন এই বাঁহাতি। আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ নেন ২ উইকেট। সুযোগ পাওয়া স্পিনার তাইজুল ইসামের শিকারও দু’টি উইকেট।
অক্টোবরে ভারতের ধর্মশালাতে ওয়ানডে বিশ্বকাপের নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। তার আগে তাদের মুখোমুখি হতে হবে এশিয়া কাপেও। সেই হিসেবে আফগানদের বিপক্ষে দুই বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের ড্রেস রিহার্সেলই ছিল টাইগারদের। তবে সেখানে দুই ম্যাচ জিতে নিজেদের শক্তির প্রদর্শনী দেখিয়েছে হাসমত উল্লাহ শাহিদীর দল। যা তাদেন সামনে এগিয়ে রাখবে মানসিক ভাবেই! প্রথম দুই ম্যাচে অসহায় আত্মসমর্পণের পর গতকাল শরিফুলের দুর্দান্ত বোলিংয়ের ছন্দ খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশ। উড়তে থাকা আফগানিস্তান চট্টগ্রামে আগে ব্যাট করতে এসে পাওয়ার প্লেতে যোগ করে মোটে ২১ রান। তবে ততোক্ষণে হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট। টাইগারদের তরুণ পেসার শরিফুল শেষ ম্যাচের একাদশে সুযোগ পেয়েছেন।
অন্যদিকে আগের ম্যাচে উদ্বোধনী জুটিতে ২৫৬ রান তুলেছিল সফরকারী আফগানিস্তান। ভয় ছিল এমন কিছু হবে না তো! সেই সুযোগও দেননি সুযোগ পাওয়া এই পেসার। মাত্র তৃতীয় ওভারেই ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। অফ স্টাম্পের বাইরে ফাঁদে ফেলেন ইবরাহিম জাদরানকে। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান বলে খোঁচা দিলে তা সরাসরি চলে যায় উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহীমের গ্লাভসে। ৩ রানেই ভাঙে আফগানিস্তানের ওপেনিং জুটি। প্রথম উল্লাসের রেশ না কাটতেই একই ওভারেই ফেরান তিনে নামা রহমত শাহকে। শূন্য রানে ফেরেন এই আফগান ব্যাটার। তিনিও ফেরেন মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে। আর তাতে ৩ রানেই ২ উইকেট হারায় সফরকারীরা। এরপর ষষ্ঠ ওভারে তাসকিনের আঘাত। প্রথম চার বল ডট দেয়ার পর পঞ্চম বলে পুল করতে চেয়েছিলেন গুরবাজ। তবে তাসকিনের বাউন্সার ব্যাটে ছোঁয়া লেগে চলে যায় পেছনে, মুশফিকের গ্লাভসে।
আগের ম্যাচে ১৪৬ রানের ইনিংস খেলা গুরবাজ আউট হন ২২ বলে ৬ রান করে। এরপর টিকে থাকার লড়াইয়ে দাঁতে দাঁত চেপে থাকে আফগানিস্তান। একটু থিতু হতে একের পর এক দিতে থাকে ডট। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি, মোহাম্মদ নবিকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন শরিফুল। মোটে ১৫ রানে ৪ উইকেট হারায় সফরকারীরা। ১১তম ওভারে ইনিংসে প্রথমবারের মতো আসেন মেহেদী মিরাজ। পরের ওভারে আনা হয়েছে সাকিব আল হাসানকেও। তবে চাপ সামলে উঠতে পারেনি সফরকারীরা। এই দুই স্পিনারকেও স্বাভাবিকভাবে খেলতে পারেনি। নাজিবুল্লাহ জাদরানকে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলেন সাকিব। ২২ বলে ১০ রান করেন তিনি। হাশমতুল্লাহ শাহিদী ফেরেন আরও ২১ রান যোগ করে। তিনিও ধরাশায়ী হন স্পিনে, তাইজুলের শিকার হয়ে ফেরেন ২২ রান করে। এরপর ফের শরিফুলের আঘাত।
দ্বিতীয় স্পেলে এসেই ফেরান অভিষিক্ত আব্দুল রহমানকে। ৬৮ রানে ৭ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়তে থাকেন আজমতুল্লাহ ওমরজাই। আরেক অভিষিক্ত জিয়াকে নিয়ে অষ্টম উইকেট জুটিতে ৫৩ বলে ২১ রান যোগ করেন ওমরজাই। জিয়া আউট হন ৩০ বলে ৫ রানে। ওমরজাইয়ের ব্যাটে ভর করেই তিন অংকের ঘরে পৌঁছায় আফগানিস্তানের ইনিংস। নিজেও তুলে নেন অর্ধশতক। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৭১ বলে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তাকে ফেরান তাসকিন। এত আগে ৩৪ বলে ১১ করে তাইজুলের দ্বিতীয় শিকার হন মুজিবুর। ৪৫.২ ওভারে ১২৬ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান।