মানুষ কতটা পিশাচ হতে পারে তার উৎকৃষ্ট একটি উদাহরণ হতে পারে ব্রাজিলের ডানিয়েল বিত্তার (৪২)। মাত্র ১২ বছর বয়সী একটি স্কুলপড়ুয়া বালিকাকে অপহরণ করে তাকে যৌনদাসী বানাতে চেয়েছে সে। অপহরণের পর ওই বালিকাকে একটি স্যুটকেসে ভরে তার বাসায় নেয়ার দৃশ্য সম্বলিত ভিডিও এখন পুলিশের হাতে। বলা হয়েছে, তাকে অপহরণ করেই ক্ষান্ত হয়নি বিত্তার। সে তাকে ধর্ষণ করেছে। তার শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গগুলো নিয়ে যাচ্ছেতাই করেছে। ঘটনা ব্রাজিলের লুজিয়ানিয়ার। ২৮শে জুন প্রেমিকা গুসিয়েলি সুজা’র (২২) সহায়তায় ওই বালিকাকে অপহরণ করে সে। ক্লোরোফরম মেশানো কাপড় তার মুখে চেপে ধরে। তাকে হুমকি দেয় ছুরি হাতে।
এক পর্যায়ে ওই বালিকাকে বিত্তারের ফ্লাটে পাওয়া যায়। তার শরীরজুড়ে থেঁতলানো দাগ।
পায়ে রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার দাগ। বিছানার সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। তাকে উদ্ধারের পর পরীক্ষায় পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে, তাকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তা জোয়াও গুইলহারমে মেডেইরোস মিডিয়াকে বলেছেন, ভিকটিম বালিকা বলেছে বিত্তার তার স্পর্শকাতর অঙ্গগুলো স্পর্শ করেছে। নিজের স্পর্শকাতর অঙ্গ ওই বালিকাকে স্পর্শ করাতে বাধ্য করেছে। বালিকাটি আরও বলেছে, তাকে সব সময় হুমকি দিত বিত্তার। বলতো, তাকে সে যৌনদাসী বানিয়ে রাখবে। তার ওপর যৌন নির্যাতন চালানোর সময় তা ক্যামেরায় ধারণ করে রাখতো এবং সেসব পাঠিয়ে দিতো তার প্রেমিকার কাছে।
এক পর্যায়ে ডানিয়েল বিত্তারের মুখোমুখি হয় পুলিশ। কিন্তু সে সব কিছু অস্বীকার করে। দাবি করে, তার ফ্লাটে যে বালিকা সে তার কাজিন। পরে স্বীকার করে। তার ফ্লাটে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ইলেকট্রিক শক দেয়ার ডিভাইস, ক্যামেরা, সেক্স টয়, পর্নোগ্রাফিক জিনিসপত্র। ঘটনাস্থল থেকে পেট্রোলের একটি ক্যানিস্টারও উদ্ধার করা হয়। এতে পুলিশ ধারণা করছে, ধর্ষণ করার পর ওই মেয়েটির শরীর পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল তার।
স্কুল থেকে ওই বালিকা নিখোঁজ হওয়ার পর অনুসন্ধান শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ইকোস্পোর্টে সন্দেহজনকভাবে একটি সুইটকেস বহন করতে দেখে ডানিয়েল বিত্তারকে। এর ফলে অপরাধ আস্তে আস্তে উন্মোচিত হয়ে যায়। ২৬ তারিখেই তারা ওই বালিকাকে অপহরণের সিদ্ধান্ত নেয়। তার বাসায় বিত্তারের প্রেমিকার বাসার কাছেই। কিন্তু ২৮শে জুন তারা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। লুজিয়ানিয়ায় ওই স্কুলে যায়। সেখানে প্রথমে শিশু ও টিনেজারদের পরখ করে তারা। তারপর নিকটস্থ এক সড়ক থেকে ওই বালিকাকে অপহরণ করে।
পুলিশের কাছে বিত্তার স্বীকার করেছে এটাই এ ধরনের তার প্রথম অপরাধ। তবে পুলিশ মনে করছে, প্রেমিকার সহায়তা নিয়ে সে এমন আরও অপরাধ করে থাকতে পারে। প্রেমিকা ভিয়েরা বলেছেন, বিত্তার তাকে প্রলুব্ধ করেছে। কিন্তু তার কথায় বিশ্বাস আনতে পারছে না পুলিশ। উল্লেখ্য, ব্যাঙ্কো ডি ব্রাসিলিয়াতে একজন আইটি টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করতেন ডানিয়েল বিত্তার। এই ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর ২৯শে জুন তাকে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে সে শিশুদের হাসপাতালেও স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করেছে। তার একটি মেয়ে সন্তান আছে। অন্যদিকে তার প্রেমিকা ভিয়েরা দুই সন্তানের মা।