উত্তর-পূর্ব ভারতে যখন বন্যা, ভূমিধস ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ঠিক তখনই তীব্র দাবদাহে নাকাল দেশটির উত্তর প্রদেশ ও বিহার। এ দুই রাজ্যে দাবদাহে প্রায় ১০০ প্রাণহানির খবর প্রকাশ করেছে দেশটির গণমাধ্যম।
এদিকে মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ ভারতের আরেক রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দারাও।
ভারতের উত্তর প্রদেশে রোববার (১৮ জুন) দুপুরে তাপমাত্রার ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজ্যটির বালিয়া জেলায় শনিবার ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয় যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ ডিগ্রি বেশি।
ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, গত তিনদিনে অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে উত্তর প্রদেশের বালিয়া জেলায়। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছেন বহু মানুষ। যাদের মধ্যে বয়স্ক এবং শিশুই বেশি।
তীব্র দাবদাহে বেড়েছে পানির সংকট। ফসলি জমিতে কৃষকরা পানি দিতে না পারায় ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ। তীব্র গরমে কৃষকরা ফসলের মাঠে যেতে পারছেন না। ভারতের কৃষিজাত পণ্যের জন্য প্রসিদ্ধ এই রাজ্যটিতে তাপপ্রবাহের কারণে কৃষিপণ্য উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে, যার প্রভাব পড়বে গোটা ভারত ও প্রতিবেশী দেশগুলোতেও।
একইভাবে তীব্র দাবদাহে পুড়ছে ভারতের আরেক রাজ্য বিহারও। রাজ্যটির ১৮টি জায়গায় চলছে তাপপ্রবাহ। আর এরই জেরে গেল ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৪৫ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম। এর মধ্যে রাজ্যটির রাজধানী পাটনাতেই সংখ্যাটা বেশি।
বিহারের রাজ্য আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শনিবার (১৭ জুন) রাজ্যের এগারটি জেলায় গড় তাপমাত্রা ছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে দেখে রাজ্যটির সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২৪ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য প্রশাসন।
একই রকমভাবে বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গেও এক সপ্তাহ জুড়ে গড়ে ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি তাপমাত্রা থাকছে। এতে রাজ্যের সাধারণ মানুষের মধ্যেও নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
এদিকে ভারতের আসামে বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি নেই। টানা কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আরও বেশ কয়েকটি জেলা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ১৩টি জেলার প্রায় ৪০ হাজার বাসিন্দা। এ অবস্থায় আরও ৫ দিন টানা ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
বিশ্বনাথ, দারাং, ধেমাজি, ডিব্রুগড়, লখিমপুর এবং উদালগুড়ি জেলায় নদীর পানি বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা লখিমপুর ও উদালগুড়ির। কয়েকটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। এসব জেলার উঁচু এলাকায় খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।