পিঠে ব্যথা নিয়েই গতকাল অনুশীলনে আসেন তামিম ইকবাল। দেশসেরা ওপেনার সকালে দলের সঙ্গে গা গরম করে নেন কিছু সময়। এরপর মিরপুর শেরেবাংলা মাঠের ইনডোরে যান ব্যাটিং অনুশীলনে। ব্যথার মাত্রা কতটা তা দেখার জন্যই তাকে অনুশীলনে পাঠানো হয়। সেই সময় দেখা যায় তিনি কিছুক্ষণ পর পরই ব্যথায় হাত দিচ্ছিন পিঠে। ২০ থেকে ২৫ মিনিট পরই সরে যান তিনি। স্পষ্ট বোঝা যায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে তার খেলা নিয়ে আছে শঙ্কা, সংশয়। এভাবে ব্যথা থাকলে তার একাদশে থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে টেস্ট শুরু হতে এখনো বাকি ৩ দিন। এর মধ্যে ব্যথা কমে গেলে আর তামিম চাইলে শেষ পর্যন্ত তার খেলার সম্ভাবনাও থাকছে।
কিন্তু প্রশ্ন থাকছে ওয়ানডে অধিনায়ককে নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এই মুহূর্তে ঝুঁকি নিবেন কিনা।
কিংবা তিনি নিজে ঝুঁকি নিয়ে খেলবেন কিনা! তবে জানা গেছে তার জন্য টেস্ট শুরুর আগের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করবে দল। এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী। দৈনিক মানবজমিনকে তিনি বলেন, ‘আমরা তামিমকে বলেছিলাম অনুশীলন করতে। কারণ, ব্যাট করার সময় তার পিঠের ব্যথার মাত্রা কতটা আমাদের জানা দরকার ছিল। হ্যাঁ, আজও (গতকাল) তার কোমর ও পিঠে ব্যথা আছে। তাই বলে এই নয় যে এখনই বলা যাচ্ছে তিনি খেলতে পারবেন নাকি পারবেন না। ঝুঁকি আছে কিনা সেটি নিয়ে আমরা এখন কিছু বলতে পারবো না। টেস্টের বাকি আছে তিন দিন।
আমরা তাকে পর্যবেক্ষণ করবো অন্তত ম্যাচের আগের দিন পর্যন্ত। এরপর সিদ্ধান্ত নিবে টিম ম্যানেজম্যান্ট।’ তবে তামিমের ইনজুরি নিয়ে আছে ভিন্ন বিষয়ও। আগেও তিনি ব্যথার কারণে নানা সময় অনুশীলন না করলেও ম্যাচ খেলেছেন ঠিকই, যা নিয়ে আছে নানা সমালোচনা গুঞ্জন! প্রশ্ন হচ্ছে ওয়ানডে অধিনায়ককে এমন ব্যথার সমস্যা নিয়ে কি ভাবছে টিম ম্যানেজম্যান্ট! যদিও এ নিয়ে সরাসরি কেউ মুখ খুলতে রাজি নয়। তবে দলের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানিয়েছেন তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়। সূত্রটি জানায়, ‘টেস্ট শুরু হতে আরো কিছুটা সময় বাকি আছে। আমরা তার জন্য শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাই। আর ঝুঁকি নেয়া হবে কি হবে না তা নিয়ে বলছি যে, দলীয় সিদ্ধান্ত একেবারেই স্পষ্ট। ফিট থাকলে তামিম খেলবেন আর ফিট না থাকলে খেলবেন না। ওয়ানডে সিরিজ শুরু হতে এখনো এক মাস বাকি। তাই আমরা এখন তার টেস্ট খেলা নিয়ে ভাবছি। আর একটা কথাতো সবাইকে মানতেই হবে ওয়ানডে আর টেস্ট কিন্তু এক নয়। যে কারণে ফিট না থাকলে কেন আমরা তাকে পাঁচ দিন খেলানোর ঝুঁকি নিবো!’
তামিমকে নেটে বল করেন পেসার তাসকিন আহমেদ ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ। এছাড়াও তাকে বল করেন স্পিনার তাইজুল ইসলামও। দুই ধরণের বোলাররাই তামিমকে রক্ষণাত্নক ভাবে বল করেছেন। এরপরও ব্যাট করার সময় বারবারই ব্যথায় তাকে কোমর ও পিঠে হাত দিতে দেখা গেছে। জানা গেছে যদি তার এই ব্যাথা এমনই থাকে তাহলে কোন ভাবেই ঝুঁকি নেয়া হবে না। আগেই জানা গেছে তার এটি নতুন কোনও ইনজুরি নয়। দীর্ঘদিন থেকেই তামিম পিঠের এই ব্যথা ম্যানেজ করেই খেলছেন। আগেও তিনি এমন পরিস্থিতিতে খেলেছেন, আবার ম্যানেজ করতে না পারলে সরে গেছেন। জানা গেছে তামিম খেলতে চেয়েছিলেন বলেই তাকে স্কোয়াডে রাখা হয়েছিল।
কিন্তু হঠাৎ করেই তার এই ব্যাথা নিয়ে বেশ দ্বিধাদ্বন্দেই আছে দল। যদি শেষ পর্যন্ত তামিম না খেলেন তাহলে তার পরিবর্তে ওপেন করতে দেখা যেতে পারে জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসান জয়কে। অন্যদিকে ইনজুরি থেকে ফিরে গতকাল পেসার তাসকিন বল করেছেন ফুল রিদমে। তবে তার খেলার বিষয়টিও কোচ, ট্রেনারদের হাতে। তারা শতভাগ ফিট মনে করলেই খেলাতে পারেন তাসকিনকে। তবে তার বিকল্পও দলে আছে। ইবাদত হোসেন চৌধুরী, খালেদ আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ছাড়াও আছেন দলের নতুন তরুণ পেসার মুশফিক হাসান। তাসকিনকে নিয়ে দলীয় একটি সূত্র জানায়, ‘তাসকিন ফুল রিদমে বল করেছে। তাকে একাদশে রাখা হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নিবে অধিনায়ক ও প্রধান কোচ।’