পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে ‘অযোগ্য’ ঘোষণার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করবে তার দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএলএন)। এ কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ বলেছেন, এই আবেদন যেন প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল শুনানি না করেন, সে আবেদনও করছে পিএমএলএন। কারণ, তারা মনে করছেন ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতি পক্ষপাতিত্ব দেখাবেন। তিনি আরও বলেছেন, স্বাস্থ্য এবং নির্বাচনের কারণে নওয়াজের দেশে ফেরা দরকার। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রিভিউ পিটিশন করার মতো অবস্থায় নেই নওয়াজ শরীফ।
সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন যে, তারা পিএমএলএনের সুপ্রিমো নওয়াজের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবেন। এর আগে ২০১৭ সালের ২৮শে জুলাই পানামা পেপারস কেলেংকারিতে যুক্ত থাকায় নওয়াজ শরীফকে আদালত অযোগ্য ঘোষণা করে। ওই মামলায় বলা হয়, তিনি নিজের ছেলের কাছ থেকে অঘোষিত বেতন নিয়েছেন, কিন্তু তা প্রকাশ করেননি, এ জন্য তিনি চিরদিনের জন্য সরকারি কোনো দায়িত্বে আসতে পারবেন না। এর এক বছর পরে ইলেকশন্স অ্যাক্ট ২০১৭ চ্যালেঞ্জ করে পিটিশনের ভিত্তিতে আদালত রায় দেয় যে, অনুচ্ছেদ ৬২ ও ৬৩ এর অধীনে কোনো ব্যক্তি অযোগ্য হলে তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
এক সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহর কাছে জানতে চাওয়া হয় নির্বাচন ইস্যুতে। এ সময় তিনি জবাবে আবারও বলেন জাতীয় নির্বাচন হবে অক্টোবরে। ওদিকে প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা খর্ব করা হবে বলে বহুল আলোচিত ‘দ্য সুপ্রিম কোর্ট রিভিউ অব জাজমেন্টস অ্যান্ড অর্ডার্স বিল, ২০২৩’ প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলফি সম্মতি দেয়ার ফলে শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
এই আইনে বলা হয়েছে, সুয়োমোটা জাজমেন্ট যে বেঞ্চ থেকে দেয়া হয়েছে রিভিউয়ের জন্য তার চেয়ে বড় বেঞ্চে শুনানি হবে।
তবে আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারারের দৃষ্টিতে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ এবং পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই)-এর সাবেক নেতা জাহাঙ্গীর খান তারিন এই নতুন আইন থেকে কোনো সুবিধা পাবেন না। এ নিয়ে সোমবার জিও নিউজকে তারার বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট বিষয়ক বিল ২০২৩ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ এবং তারিন কেউই সুবিধা পাবেন না। কারণ, তারা উভয়েই তাদের শাস্তির বিরুদ্ধে রিভিউ করার অধিকার ভোগ করেছেন। আইনমন্ত্রী বলেন, অনুচ্ছেদ ১৮৪(৩) ধারার অধীনে আদালতের রায়ই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। আইনে রিভিশনের আর কোনো স্থান নেই। জিও নিউজের ‘জিও পাকিস্তান’ অনুষ্ঠানে সিনিয়র বিশ্লেষক ও আইন বিশেষজ্ঞ মুনিব ফারুক বলেন, এরই মধ্যে রিভিউ পিটিশন জমা দেয়া হয়েছে। তবে এতে সুযোগ সীমিত। তিনি আরও বলেন, আইনটি কার্যকর হওয়ার ফলে কোনো রিভিউ/আপিল শুধু প্রকৃত সত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে এমন নয়। একই সঙ্গে আইন নিয়েও প্রশ্ন তোলা যাবে। তিনি আরও বলেন, আগে যেসব বিচারক মূল সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন তারাই রিভিউ শুনানি করবেন। কিন্তু এবার তাতে বিচারকের সংখ্যা বাড়ানো হবে নতুন আইনে।