৬৫ হাজার ২৫০ মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে আরেকটি বড় জাহাজ YM ENDEAVOUR ভিড়েছে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের কয়লা জেটিতে। শুক্রবার (১৯ মে) দুপুর ১২টায় গভীর সাগর থেকে কৃত্রিম চ্যানেল (ব্রেক ওয়াটার) দিয়ে জাহাজটি জেটিতে আনা হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের অভিজ্ঞ পাইলট মো. মাসুদ হোসাইনের নেতৃত্বে পাইলটেজ টিম জাহাজটি জেটিতে নিয়ে আসেন। এ কাজে সহায়তা করে চট্টগ্রাম বন্দরের শক্তিশালী টাগ কাণ্ডারী ২ ও ৪সহ চারটি টাগ।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, হংকংয়ের পতাকাবাহী YM ENDEAVOUR নামের জাহাজটি ২২৮ দশমিক ৯৯ মিটার লম্বা। পানির নিচে জাহাজটির গভীরতা (ড্রাফট) সাড়ে ১২ মিটার। আশাকরা হচ্ছে শনিবার (২০ মে) থেকে এ জাহাজের কয়লা খালাস শুরু হবে।
এর আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬৩ হাজার টন কয়লা নিয়ে গত ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ২২৯ মিটার দীর্ঘ ও ১২ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফট’র (জাহাজের পানির নিচের গভীরতা) পানামার পতাকাবাহী এমভি ‘অউসো মারো’ মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের বহির্নোঙরে আসে। পরদিন মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জাহাজটি বিশেষ নজরদারির মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে আনা হয়। এটি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ। একই সঙ্গে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য প্রথম কয়লা নিয়ে আসা জাহাজ। জাহাজটি সফলভাবে কয়লা খালাস করে গত ৭ মে সকাল ৯টা ৪২ মিনিটে মাতারবাড়ী জেটি ছেড়ে যায়।
সমুদ্র থেকে ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৩৫০ মিটার চওড়া কৃত্রিম চ্যানেলের মধ্য দিয়ে জাহাজগুলো জেটিতে আনা হচ্ছে। এ দুইটি জাহাজের আগে এ জেটিতে ১১২টি জাহাজ ভিড়লেও সেগুলোতে ছিল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উপকরণ। বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাঁচামাল কয়লা নিয়ে এসেছে দুইটি জাহাজ।
চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে এখন সর্বোচ্চ ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার লম্বা জাহাজ আনার সুযোগ আছে। পায়রাবন্দরেও চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ভিড়েছে ১০ দশমিক ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ।
চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে এখন সর্বোচ্চ ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ আনার সুযোগ আছে। পায়রাবন্দরেও চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ভিড়েছে ১০ দশমিক ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ। কিন্তু ‘অউসো মারো’র মতো দীর্ঘ ও ড্রাফটের জাহাজ এটাই প্রথম।
চট্টগ্রাম বন্দরের একজন কর্মকর্তা বলেন, মাতারবাড়ী বাংলাদেশের মেরিটাইম সেক্টরের নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে। নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির। এখন পর্যন্ত দুইটি বড় জাহাজ ভিড়েছে। এ সাফল্য মেরিটাইম ওয়ার্ল্ডে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর করেছে। এখন একের পর এক জাহাজ আসবে কয়লা নিয়ে।
মাতারবাড়ীতে সমুদ্র বন্দর প্রকল্পের আওতায় ৩০০ মিটার দীর্ঘ একটি মাল্টিপারপাস জেটি এবং ৪৬০ মিটার দীর্ঘ একটি কনটেইনার জেটি নির্মিত হবে।