বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন দলটির
সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, কেউ যাতে নাশকতা করতে না পারে, এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। যারা নাশকতা করবে, তাদের সমুচিত জবাব দেয়া হবে। কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হবে না। একইসঙ্গে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরে জনসংযোগ করার পাশাপাশি সরকারি প্রকল্পের উপকারভোগীদের খোঁজখবর নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের যৌথসভায় ভার্চ্যূয়ালি যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করে এই নির্দেশনা দেন। এ সময়ে প্রায় দশ মিনিট ভিডিও কলে কথা বলেন ও উপস্থিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে থাকা একাধিক নেতা জানান, কথা বলার সময় দলীয় সভাপতি মূলত কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন। অনাবাদি জমি ফাঁকা রাখা যাবে না।
যার জমি আছে তাকে উৎপাদন বাড়াতে বলেছেন। গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে যেতে বলেছেন। বিশেষ করে সরকারের উন্নয়নের চিত্র মানুষের কাছে তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে বিএনপি’র আমলের অপশাসন দুর্নীতির চিত্র এবং পার্থক্য মানুষের সামনে তুলে ধরার কথা বলেন। দলীয় সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এলাকায় কোনো দলাদলি করা যাবে না। মনোনয়ন দেবো আমি। যারা মনোনয়ন পেতে আগ্রহী, সবাই এলাকায় একসঙ্গে কাজ করবে। কোনো ধরনের দ্বন্দ্বে লিপ্ত হওয়া যাবে না। কৃষকদের ধান কাটার সহযোগিতা করার পাশাপাশি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বলেন শেখ হাসিনা। আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিষয়ে তিনি বলেন, যার যার এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্প আছে সেখানে গিয়ে মানুষের খোঁজখবর নিতে হবে। আমি একটা লোককেও ঘরহীন, ভূমিহীন রাখবো না। যদি কোনো এলাকায় কোনো ভূমিহীন থাকে খোঁজ নেবে, তাদের ঘর দেয়া হবে। ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফসহ ছাত্রলীগেরও বেশ কিছু নেতা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে জানতে চান দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। তখন তারা জানান পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রস্তুত করা হয়েছে। দলীয় প্রধানকে একটু দেখাতে চান। ঈদের পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। বাড়ি যাওয়ার সময় সতর্কভাবে চলাফেরা করার জন্য ছাত্রলীগ নেতাদের নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। তিনি তাদের বাইক চালানোর সময়ও যাতে সবাই সতর্ক থাকেন, সেই কথা মনে করিয়ে দেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাদের সাদাসিধে জীবনযাপনের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, মানুষের সঙ্গে মিশে থাকতে হবে, তাদের কথা চিন্তা করতে হবে। সভায় উপস্থিত নেতারা জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অসহায়, দুস্থ এবং গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশনার পাশাপাশি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দলকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস সম্পর্কে দেশবাসীকে সচেতন করাসহ সারা দেশের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। এছাড়াও দলীয় নেতা কর্মীদের বৃক্ষ রোপণ করতেও নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এর আগে ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লী, সম্পাদকম-লীর সদস্য, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া সাংবাদিকদের বলেন, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে দলীয় নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি নির্বাচনকে সামনে রেখে জনসংযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারের অসংখ্য প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধসহ সব পর্যায়ের জনগণকে নানা ধরনের ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এই ভাতাগুলো উপকারভোগীদের কাছে সরাসরি যাচ্ছে কি-না সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতে বলেছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে কি-না সে বিষয়েও সরজমিন খোঁজখবর নিতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন সরকার প্রধান।