টালমাটাল ইসরাইল। বিচার বিভাগের আইন সংস্কারের মধ্য দিয়ে নিজের ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করতে গিয়ে মহাবিপদে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। দেশের সব শ্রেণির মানুষ তার বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছে। তারা ক্ষোভে ফুঁসছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিক্ষোভকারীদের পক্ষ নিয়ে মন্তব্য করায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করেছেন নেতানিয়াহু। এর ফলে আন্দোলন প্রশমিত না হয়ে আরও উত্তেজিত হয়ে উঠেছে। সাধারণ জনতার পাশাপাশি সেনারাও অবস্থান নিয়েছে। নেতানিয়াহুর জেরুজালেমের বাসভবনের চারদিকে অবস্থান নিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। তাদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।
এ অবস্থায় পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক জীবনে এমন বিরোধিতা, এমন কঠোর আন্দোলনের মুখোমুখি হননি কখনো। এ অবস্থায় তিনি যদি পিছপা না হন, যদি গোঁ ধরেই থাকেন, তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। হয়তো তা আঁচ করতে পেরেছেন নেতানিয়াহু। তাই সোমবারই তিনি এ ইস্যুতে ভাষণ দিতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছে ইসরাইলি মিডিয়া। অনলাইন আল জাজিরা বলছে, এমন অবস্থায় সোমবার দিনের শুরুতে উগ্র-ডানপন্থি জোটের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন তিনি। পরে বলা হয়েছে, তিনি বিচার বিভাগের আইন সংশোধন পরিকল্পনা স্থগিত করার ঘোষণা দিতে পারেন। সোমবার এ আন্দোলনে যোগ দেন তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের স্টাফরা। ফলে ওই বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট ছিল স্থগিত। এর শিকারে পরিণত হন হাজার হাজার ভ্রমণকারী। তুরস্কের জাতীয় পতাকাবাহী টার্কিশ এয়ারলাইন্স ইস্তাম্বুল ও তেল আবিবের মধ্যে সব ফ্লাইট বাতিল করে। ইসরাইলের সাবেক আইনমন্ত্রী ইয়োশি বেইলিন আল জাজিরাকে বলেছেন, আইনের সংস্কার প্রস্তাব ইসরাইলের জন্য ইতিবাচক নয়। এই প্রস্তাব আমাদের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। এর মধ্য দিয়ে ইসরাইলকে আরও দুর্বল করে দেয়া হচ্ছে। এমনিতেই অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে ইসরাইল। ওদিকে সংস্কার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ক্রমেই উত্তেজনা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জার্মান সরকার। মুখপাত্র স্টিফেন হেবেস্ট্রেইট বলেছেন, ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট হারজগ যে আহ্বান জানিয়েছেন তা অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। ইসরাইলের একটি ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে আমরা সাধারণত তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। তবে আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি কয়েকদিনে সেখানে কি ঘটছে।