‘পাকিস্তান পুলিশের আসল উদ্দেশ্য তাকে অপহরণ এবং হত্যা করা। গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা ছিল নিছকই একটি নাটক’। তাকে হেফাজতে নেয়ার প্রচেষ্টা প্রসঙ্গে এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা একটি টুইটার পোস্টে এই গুরুতর অভিযোগ করেছেন- যখন তার সমর্থকরা লাহোরের বাসভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করছিলো। ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা এবং তাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও পিটিআই কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ থেকে শুরু করে কাঁদানে গ্যাস-জলকামান ব্যবহার করে, একাধিক পিটিআই কর্মী আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে। সংঘর্ষ থামাতে আরও শক্তিশালী বাহিনীকে ডাকার প্রয়োজন । খান আজ বুলেট শেলের ভিজ্যুয়াল টুইট করেছেন এবং বলেছেন যে, এই ভিডিওই প্রমাণ করে পুলিশের অভিপ্রায় কী ছিলো । তিনি লিখেছেন, গ্রেপ্তারের দাবিটি স্পষ্টতই নাটক ছিল কারণ আসল উদ্দেশ্য ছিল অপহরণ এবং হত্যা করা। টিয়ারগ্যাস এবং জলকামান থেকে পুলিশ এখন সরাসরি গুলি চালানোর পথ অবলম্বন করেছে।
আমি গত সন্ধ্যায় একটি জামিন বন্ডে স্বাক্ষর করেছি, কিন্তু ডিআইজি এটি দেখতেও অস্বীকার করেছিলেন। তাদের অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
তার সমর্থকদের মোকাবেলা করার জন্য আধা-সামরিক বাহিনী পাঠানোর পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন ইমরান। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, রেঞ্জার্স সরাসরি নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের মুখোমুখি হচ্ছে। এটাই কি আপনাদের নিরপেক্ষতার ধারণা?
৭০ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ এবং একসময়ের ক্রিকেট কিংবদন্তিও তোষাখানা দুর্নীতি মামলায় মোস্ট ওয়ান্টেড। গত অক্টোবরে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন তাকে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া উপহার বেআইনিভাবে বিক্রি করার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিবিরোধী আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। খান সমন এড়িয়ে যাওয়ার পরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় । গত সন্ধ্যায় একটি ভিডিও বার্তায় পিটিআই প্রধান বলেছিলেন, পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করতে এসেছে। তারা মনে করে ইমরান খান জেলে গেলে জনগণ ঘুমিয়ে যাবে। আপনাদের তাদের ভুল প্রমাণ করতে হবে। এরপরই ইসলামাবাদ, পেশোয়ার এবং করাচিতে খানের সমর্থকরা রাস্তায় নেমে এসে এমন প্রতিবাদ জানায়। ইমরানের আরও দাবি, এই গ্রেপ্তারি লন্ডন প্ল্যানের অংশ। ইমরান খানকে জেলে ভরে, পিটিআই-র পতন ঘটিয়ে এবং নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা বন্ধ করে দেওয়ার চুক্তি করা হয়েছে।
গত বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর খান আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন। এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন তার উত্তরসূরি শেহবাজ শরিফ।