রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের তেজকুনিপাড়া বস্তিতে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও চারিদিকে এখনও ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে বসবাসকারীদের বাড়িঘর ও জিনিসপত্র। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির উপর দাঁড়িয়ে কান্না জড়িত কণ্ঠে পিকিং বেগম বলেন, আমার সবকিছু পুড়ে ছাই হয়েছে। কিছু বের করতে পারিনি। আগুন লাগার পরই শুধু জীবনটা নিয়ে দৌড়ে বেরিয়েছি। সঙ্গে ছিল আমার দুই সন্তান।
সরজমিনে দেখা যায়, পোড়া স্তুপের মধ্যে সব হারিয়ে আহাজারি করছেন অনেকে। অসহায় হয়ে কেউ কেউ খুঁজছেন তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র। সরিয়ে নিচ্ছেন স্টিল ও লোহার ব্যবহারিত মালামালের পোড়া অংশ। ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা মুক্তা বেগম তার ঘরের সামনে অসহায়ের মতো বসে আছেন। ১০ বছর ধরে বসবাস করেন এই রুলিং মেল কুনিপাড়া বস্তিতে।
তার ঘরের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়েছে। তিনি বলেন, আমার টিভি, ফ্রিজসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়েছে। দশ বছর আগে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম ঢাকায়। গ্রামের বাড়ি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া। স্বামী বার্জার কোম্পানিতে চাকরি করে। এই রুমে ৭ হাজার টাকা ভাড়া দিয়েছি। তিনি বলেন, আমার সংসারের সব শেষ হয়ে গিয়েছে। কত স্বপ্ন নিয়ে সংসার সাজিয়ে ছিলাম। নগদ দশ হাজার টাকা ঘরে ছিলো। এখন খাওয়ার জন্য ও কোন টাকা নেই। আগুন লাগার পর এক কাপড়ে বেরিয়েছি সেই এক কাপড়ে এখনও আছি। সঙ্গে আমার বাবা-মা থাকতেন। বাবার চায়ের দোকান আছে। আমরা জীবন নিয়ে দৌড়াইছি। কোন মালামাল বাঁচাতে পারিনি।
উল্লেখ্য, সোমবার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের তেজকুনিপাড়া বস্তিতে সোমবার রাত ৭টা ৫৩ মিনিটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। রাত ১০টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ১১টি ইউনিট।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের সিনিয়র স্টাফ অফিসার মো. শাহজাহান শিকদার জানান, আমাদের ১১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করেছে। আগুন রাত ১০ টা ২০ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি।