টেস্ট আর ওয়ানডেতে নিয়মিত হলেও টি-টোয়েন্টি দলে মেহেদী হাসান মিরাজ ফার্স্ট চয়েজ নন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে একাদশের বাইরে ছিলেন অফস্পিনিং এই অলরাউন্ডার। এবার মিরপুর শেরে বাংলার পিচের চরিত্র মাথায় রেখে একাদশে ফেরানো হয় মিরাজকে, প্রত্যাবর্তনেই তিনি দেখালেন ঝলক। ইংল্যান্ডকে রীতিমতো আতঙ্কে রাখা এই স্পিনার গতকাল করেছেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং। ৪ ওভারে ১২ রান দিয়ে এই অফ স্পিনার নেন ৪ উইকেট। ইংল্যান্ড গুটিয়ে যায় ১১৭ রানে। শুধু বোলিংয়ে নয় ব্যাট হাতে ২০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন মিরাজ। ব্যাটে-বলে অসাধারণ নৈপুণ্যে ম্যাচ সেরার পুুরস্কার জেতেন এই অলরাউন্ডার। এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশের হয়ে ১৯ টি-টোয়েন্টি খেলে তার উইকেট ছিল স্রেফ ৮টি। গত সেপ্টেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে একটি ম্যাচের ৩ উইকেট বাদ দিলে পরিসংখ্যান হয়ে যায় আরও নাজুক।
সেই মিরাজ এদিন ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের ভোগালেন লাইন-লেংথ, ফ্লাইট আর টার্নে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তো বটেই, ২০ ওভারের ক্রিকেটে ১১৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারে মিরাজের সেরা বোলিং এটিই। এই ম্যাচের আগে মিরাজ দেশের হয়ে সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন গত বিশ্বকাপে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিডনিতে ৩ ওভারে ৩২ রান দিয়ে তিনি ছিলেন উইকেটশূন্য। বিশ্বকাপে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছিলেন ওই এক ম্যাচেই। বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেও ২ ওভারের বেশি বোলিং পাননি। সেখানে অবশ্য পারফরম্যান্স খারাপ ছিল না। তবে জায়গা নিয়মিত করতে পারেননি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই ম্যাচের একাদশে মিরাজের জায়গা পাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা নিশ্চিতভাবেই উইকেটের। সহায়ক উইকেট পেয়ে তিনি কাজে লাগান দারুণ বোলিংয়ে। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এদিন মিরাজকে আক্রমণে আনেন নবম ওভারে, দলের ষষ্ঠ বোলার হিসেবে। দুই বাঁহাতি বেন ডাকেট ও মইন আলি তখন ক্রিজে। যে লক্ষ্যে মিরাজকে আনা, তা তিনি পূরণ করে দেন প্রথম ওভারেই। সুইপ খেলে মিড উইকেটে ধরা পড়েন মঈন। পরের ওভারে তিনি রান দেন ৪। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে তিনি ধরেন জোড়া শিকার। দুটিই স্টাম্পিং। শুরুতে বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে বিদায় করেন স্যাম কারানকে, পরে দুর্দান্ত ফ্লাইট, টার্ন ও বাউন্সের শিকার ক্রিস ওকস। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে ক্রিস জর্ডানকে ফিরিয়ে পূরণ করেন তিনি ৪ উইকেট। বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে অফ স্পিনে এর চেয়ে ভালো বোলিং আছে আর কেবল একটিই। গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০ রানে ৫ উইকেট নেন মোসাদ্দেক হোসেন। এদিকে দারুণ বোলিং করা মিরাজ ব্যাট করতে নামেন চতুর্থ উইকেটে। ৫৬ রানে তৌহিদ হৃদয়ের আউটের পর সাকিব নিজে না এসে মিরাজকে পাঠান। ব্যাট হাতে অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দেন এই অলরাউন্ডার। পঞ্চম উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ৪১ রানের জুটি গড়েন মিরাজ। যার মধ্যে ১৬ বলে ২০ রানের গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস খেলেন তিনি।