পঞ্চগড়ে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভকালে পুলিশের সঙ্গে মুসল্লিদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে পুলিশসহ বেশ কয়েকজন মুসল্লি আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালীন বেশকিছু বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে এবং আতঙ্কের কারণে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষের চলাচলও কমে গেছে।
বিভিন্ন রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবস্থান নিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাদিয়ানিদের জলসা বন্ধের দাবিতে শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বিভিন্ন মসজিদ থেকে মুসল্লিরা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে সমবেত হন। পরে তারা মিছিল বের করেন।
শের-ই বাংলা পার্ক সংলগ্ন মহাসড়কে মিছিল থেকে ইটপাটকেল ছোড়া হলে পুলিশ বাধা দেয়। এ নিয়ে পুলিশ ও মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, জুমার নামাজ শেষে শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে লোকজন ছোট ছোট মিছিল নিয়ে চৌরঙ্গী মোড়ে সমবেত হয়। পরে সেখান থেকে সম্মিলিত মিছিল বের করে।
এই মিছিলকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাকে পুলিশ মিছিলের আশপাশে ছিল। কিন্তু আকষ্মিকভাবে মিছিল থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ নিয়ে পুলিশ ও মিছিলকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে তিন পুলিশ সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। মিছিলকারীরা শহরের ধাক্কামারা এলাকায় গিয়ে ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করলে সেটি ভস্মীভূত হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীদের হামলায় পুলিশ ও বিজিবির গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েকটি কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব এবং বিজিবি তৎপর রয়েছে। কোনো প্রাণহানি যেন না ঘটে সেদিকেও সোচ্চার রয়েছে প্রশাসনের সর্বমহল। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার একই দাবিতে পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন মুসল্লিরা। প্রায় ৫ ঘণ্টা এই অবরোধ চলে। বিকেল ৩টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সফিকুল ইসলাম এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সমঝোতার আশ্বাস দেন। পরে মুসল্লিরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।