শফিউল আলম, রাউজান প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামে রাউজানে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০ শতক জমি দখলে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পরিমাপ করে খুঁটি পুতে দিলেও ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বাহুর বলে স্থাপন করা খুঁটি উঠিয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের। জানা যায়, ১৯০৫ সালে উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তর দলই নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সে সময় প্রয়াত প্রাণ কৃষ্ণ মহাজন নামে এক দানশীল ব্যক্তি বিদ্যালয়ের জন্য ৫৮শতক জমি দান করেন। পরে রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী আরও দুই শতক জমি কিনে দেন। সে হিসেবে জমির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬০ শতক জমি। কাগজে কলমে ৬০ শতক জমি হলেও দখলে আছে মাত্র ৪০ শতক জমি। বাকী ২০ শতক দখলে রেখে ভোগ করে আসছেন গহিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বাঁশি ও তার আপন ভাই নুরুল আলম। চেয়ারম্যান পরিবারে দখলে থাকা জমি উদ্ধারের জন্য উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রিদুয়ানুল ইসলামের নিদের্শনায় সার্ভেয়ার দ্বারা পরিমাপ করে খুঁটি পুতে দেয়। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান শিক্ষক স্কুলে গিয়ে খুঁটিগুলো দেখতে না পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেন। গতকাল ২৭ ফেব্রুয়ারী সোমবার দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়। খুঁটির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছে না। বিদ্যালয়ের জমি দখল করে কতিপয় ব্যক্তি ঐক্যতান ক্লাব নাম দিয়ে পাকা ভবন নির্মাণ করেছে। উত্তর দলই নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সায়েমা জামাল বলেন, জমির নামজারির কাগজ পর্যবেক্ষণ করে বেদখলে থাকা জমি উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার দ্বারা পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি পুতে দিলে রাতের আঁধারে খুটিগুলো তুলে নিয়ে যায়। তার অভিযোগের তীর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান পরিবারের দিকে। আমরা বিদ্যালয়ের বেদখলে থাকা জমি উদ্ধার করে সীমানা নির্ধারণ করতে চাই। এই প্রসঙ্গে কথা বললে গহিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বাঁশি বলেন, ‘খুঁটিতে কি জায়গা চলে যাবে? আমাকে না জানিয়ে পরিমাপ করা হয়। স্কুলের জায়গা আমার বা আমার ভাই কিংবা পরিবারের কোনো সদস্যের দখলে থাকলে আমরা ছেড়ে দিবো। খুঁটি উঠিয়ে ফেলার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।’ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল কুদ্দুস বলেন, রাউজানে উত্তর দলইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট জমির পরিমাণ ৬০ শতক। ওই জমির মধ্যে কিছুজমি স্কুলের দখলের বাইরে চলে যায়। রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) নির্দেশে বেদখলে থাকা জমি পরিমাপ করে খুটি পুতে দখল করা হয়। উল্লেখ্য, উত্তর দলই নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুটি ভবন, একটি ওয়াশ ব্লক। মোট শিক্ষার্থী ১৬১জন, শিক্ষক রয়েছেন ৭জন।
বিদ্যালয়ের জমি একাংশ দখল করে কতিপয় ব্যক্তি ঐক্যতান ক্লাব নাম দিয়ে পাকা ভবন নির্মাণ
সংবাদটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন
একটি মন্তব্য করুন