সত্তর বছর বয়সী আকবর আলী। শেরপুর থেকে ঢাকায় আসেন চল্লিশ বছর আগে। গ্রামে তার জমিজমা নেই। আকবর আলীর সঙ্গে রাজধানীর খামারবাড়িতে কথা হয় গত বুধবার। দুপুরের রোদে দাঁড়িয়ে যাত্রীর অপেক্ষা করছিলেন।
বললেন, ৭ ছেলেমেয়ে আমার। এক রিকশা চালিয়ে নিজের আয়ে চলেছি এতদিন। ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছি। ঢাকায় এসে শুরুতে একটা রিকশা কিনেছিলাম। সেটা চুরি হয়ে যায়। পরে ভাড়ায় রিকশা চালানো শুরু করি।
চলছিলাম ভালোই।
কিন্তু গত বছর থেকে এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে- স্বামী-স্ত্রী এই দু’জনের খরচই চালাতে পারি না যেন। অসুখ বিসুখে চিকিৎসা করাই না। ছেলেমেয়েদের কাছেও চাইতে পারি না। অসুবিধা তাদেরও।
আগারগাঁও তালতলার এক বাসার নিচতলায় ভাড়া থাকি। সঙ্গে নাতিদের রাখি। মাঝে মাঝে বাসা ভাড়া দিতে পারি না। তখন মেয়েরা সাহায্য করে।
চাল কিনতে গিয়ে বেশি অসুবিধায় পড়ে যাই। মাছ, মাংস, সবজি কিনতে গেলেও তাই। রিকশার জমা প্রতিদিন এক থেকে দেড়শ’ টাকা। কামাই করি ৬ থেকে ৭শ’।
অসুস্থ হলে ভয় পেয়ে যাই। রিকশা চালানো বন্ধ থাকে। নিয়মিত যে ওষুধ কিনে খাই তারও দাম বাড়ছে। আত্মীয়স্বজন আসা ভালো। কিন্তু এলেও বড্ড অসুবিধা হয়। আগে এমন হতো না।
আকবর আলী আরও বললেন, এই বয়সে আর কতো কাজ করা যায়! বয়স ৭০ বছর হলো। কুলাতে পারি না। চল্লিশ বছরেও এমন অসুবিধায় পড়িনি এবারের মতো। সবকিছুর দাম এমনভাবে বাড়ছে, যা কোনোদিন কল্পনাও করিনি।