ওয়েলন সন্ডার্স। বয়স ২০ মাস। ২৪ জানুয়ারি কানাডার দক্ষিণ-পশ্চিম অন্টারিওর পেট্রোলিয়ায় একটি হোম ডে কেয়ারের আউটডোর পুলে পড়ে গিয়েছিলো একরত্তি ছেলেটি। প্রবল ঠান্ডা ছিল সেই সময়। সুইমিংপুলের হাড়কাঁপানো ঠান্ডা পানির মধ্যে ৫ মিনিট ভেসে ছিল সে। যখন উদ্ধারকারীরা তাকে শার্লট এলেনর এঙ্গেলহার্ট হাসপাতালে নিয়ে আসে তখন ওয়েলনের সারা শরীর ঠান্ডা এবং প্রাণহীন। শিশুটির শরীরে প্রাণের স্পন্দন ফিরিয়ে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে থাকেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শিশুটিকে ভর্তি করানোর আগেই রুম হিটার চালু করে ঘরটি গরম করা হয়।
সিবিসি নিউজের মতে, পেট্রোলিয়া লন্ডন থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে। হাসপাতালে শিশুদের জন্য আলাদা বিভাগ এবং কর্মীদের অভাব রয়েছে। সেই দিন ল্যাবকর্মী এবং নার্স সবাই কাজ বন্ধ করে ওয়েলনের কাছে ছুটে আসেন তাকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ।
তারা পর্যায়ক্রমে শিশুটিকে তিন ঘণ্টার জন্য সিপিআর দেয়। সিপিআর চলার পর শিশুটির হৃদস্পন্দন ফের শুরু হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ টেলর জানাচ্ছেন, এটি সত্যিই একটি গোটা টিমের অসাধারণ প্রচেষ্টা ছিল। ল্যাব টেকনিশিয়ানরা রুমে পোর্টেবল হিটার ধরে রেখেছিলেন। ওয়েলনের শ্বাসনালীতে অক্সিজেন পৌঁছে দিতে ইএমএস কর্মীরা কম্প্রেসার ঘোরানোর কাজ করছিলেন এবং নার্সরা গরম পানির ব্যবস্থা করতে করতে ঘন ঘন মাইক্রোওয়েভের দিকে ছুটে যাচ্ছিলেন।
ওয়েলনকে ৬ ফেব্রুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছিল এবং এখন প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বাড়িতে থাকার পর সে সুস্থ হয়ে উঠছে। তার পরিবার বিশ্বাসী যে, বাড়িতে যত্নের মধ্যে থেকে ওয়েলন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবে। যদিও নিঃসন্দেহে সামনে একটি দীর্ঘ পথ রয়েছে।
ড. টেলর এবং টিজসেনের মতে, এটি ছিল দক্ষতা, সংকল্প এবং দলগত কাজের সমন্বয় যা সেই দিন ওয়েলনকে বাঁচিয়ে রেখেছিল। ডাঃ টিজসেন বলেছেন, ওয়েলন প্রতিকূল পরিস্থিতিকে হারিয়ে ফিরে এসেছে। হাসপাতালের কর্মীরা সবাই একসাথে খুব ভালোভাবে কাজ করেছে, এবং তারা শিশুটির যত্নে কোনো ত্রুটি রাখেনি।