ব্রাজিলে জন্ম নেয়া একটি শিশুকন্যা ডাক্তারদের চমকে দিয়েছিলো। আসলে জন্ম থেকেই শিশুকন্যার নিতম্বের ঠিক উপরে ছিলো আস্ত একটি লেজ। চিকিৎসা জগতের এই বিরল ঘটনাটি জার্নাল অফ পেডিয়াট্রিক সার্জারি কেস রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে।
সমীক্ষা অনুসারে, স্পাইনা বিফিডা, একটি জন্মগত অস্বাভাবিকতা যা একটি শিশুর মেরুদণ্ডে দেখা যায়। মেরুদণ্ডের শেষ যেখানে হচ্ছে সেই অংশে মাংসপিণ্ড তৈরি হয়। অনেক সময় সেই মাংসপিণ্ড বেড়ে গিয়ে লেজের মতো আকার নেয়। জন্মের সময় ব্রাজিলের ওই শিশুকন্যার মধ্যে এই বিরল সমস্যা উপস্থিত ছিল। এই অবস্থার কারণে শিশুটির মেরুদণ্ডে একটি ফাঁক তৈরি হয়েছিল, সম্ভবত লেজের বৃদ্ধির ফলে।
জার্নালে লেখা হয়েছে, শিশুটির মেরুদণ্ডের শেষাংশ থেকে একটা মাংসপিণ্ড গজিয়েছিল। মেরুদণ্ড এবং পেলভিস যেখানে মিলিত হয় সেখানে এই নরম টিস্যুর লেজ তৈরি হয় । লম্বায় ছিল প্রায় ৬ সেন্টিমিটারের মতো।
গবেষকদের বক্তব্য, সদ্যজাতের মায়ের কোনও অসুখ ছিল না। ত্বক-আচ্ছাদিত উপাঙ্গটি একটি অস্ত্রোপচারের সময় সার্জনরা দ্রুত অপসারণ করেছিলেন।
বিজ্ঞান বলছে, প্রত্যেক মানুষের শরীরের শিরদাঁড়ার শেষে এমনই একটি ছোট্ট লেজ লুকিয়ে থাকে। আধুনিক মানুষের ক্ষেত্রে লেজ একটি লুপ্তপ্রায় অঙ্গ, বা ভেস্টিজিয়াল অর্গান। ব্রাজিলিয়ান শিশুটির একটি এমআরআই করা হয়েছিল, যেখানে দেখা যায় বহু-স্তরযুক্ত টিস্যু চ্যানেল । যাকে ছদ্ম-লেজ বা pseudo-tail হিসাবে উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকরা।
অস্ত্রোপচারের পরে নবজাতকের একটি সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড ফুটো হয়ে গিয়েছিল। শিরায় অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রয়োগের সময় তাকে পাশ ফিরিয়ে শুইয়ে রাখা হতো এবং তার অস্ত্রোপচারের অংশটি শুকনো রাখার চেষ্টা করা হতো । শিশুটির বয়স এখন তিন বছর এবং বিষয়টি তার উপর কোন স্থায়ী প্রভাব ফেলেনি। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন শিশুটি ফলোআপে রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে, তার মূত্রনালীর সংক্রমণ দেখা দিয়েছিলো। যা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে সফলভাবে সরানো গেছে।