সকাল সাড়ে আটটায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রথম ঘণ্টায় প্রার্থীরা নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেছেন। তবে সাধারণ ভোটারদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। নির্বাচন গ্রহণকারী কর্মকর্তারা ভোটারের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে দুটি আসনের প্রার্থী আলোচিত হিরো আলম এবং বগুড়া সদর আসনের আরেক প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দ অভিযোগ করেছেন- তাদের নির্বাচনী এজেন্টদের বেশ কিছু বুথে ঢুকতে দেয়া হয়নি।
সরজমিন কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, শুরুর দেড় ঘণ্টায় হাতেগোনা কিছু ভোট পড়েছে। বগুড়া সদরের এরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল পৌনে দশটার দিকে হিরো আলম ভোট প্রদান করেছেন। ওই বিদ্যালয়ে পুরুষ এবং মহিলা আলাদা দুটি কেন্দ্র করা হয়েছে। সেখানে পুরুষ ভোটার ২ হাজার ৯১৯ জনের মধ্যে মাত্র ভোট প্রদান করেছে ১৫০ জন ভোটার। নারী মোট ভোটার ২ হাজার ৮৬৮ জনের মধ্যে মাত্র ১৮ জন ভোটার তাদের ভোট প্রদান করেছেন।
কেন্দ্র দুুটির প্রিজাইডিং অফিসার অপূর্ব কর্মকার এবং জিয়াউর রহমান এসব তথ্য দিয়েছেন। এখানে ইভিএম মেশিনের ছোটখাটো সমস্যার কথাও জানা গেছে।
অপদিকে সদরের পল্লী মঙ্গল বাড়ইপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে ২ হাজার ৫৭২ ভোটারে মধ্যে দেড় ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ১৫০টি। শেখের কোলা শেখ মুজিব উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩ হাজার ৮৯৭ ভোটারের মধ্যে সকাল দশটা পর্যন্ত ভোট প্রদান করেছেন ১০০ ভোটার।
ভোটারের উপস্থিতি কম কাহালা-নন্দীগ্রামেও।
প্রায় কেন্দ্রেই ভোটের উপস্থিতি আশঙ্কাজনক কম। কাহালুর মুড়ইল উচ্চবিদ্যালয়ে মোট ভোটার ৩ হাজার ২৪২ জন। সকাল দশটা পর্যন্ত ভোট প্রদান করেছে ৫০ জন। প্রিজাইডিং অফিসার আমিনুল ইসলামের বরাত দিয়ে আমাদের কাহালু প্রতিনিধি মহররম আলী এতথ্য দিয়েছেন।
এদিকে আমাদের নন্দীগ্রাম প্রতিনিধি নাজির হোসেন জানিয়েছেন, সেখানেও সকাল থেকেই ভোটারের উপস্থিতি একেবারেই কম। ওদিকে ভোটের কয়েক দিন আগে থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অভিযোগ করে আসছিলেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে। তাদের অভিযোগ ছিলো কর্মীদের নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদান করে আসছিলেন ক্ষমতাসীল দলের পক্ষ থেকে। এজন্য ভোটে উপস্থিতি কম হবে বলে আগেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এখন পর্যন্ত দৃশ্যত তেমনটাই মনে হচ্ছে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সকাল ১১) কেন্দ্রগুলো ভোটার শূন্যই রয়েছে।
কথা হয় কাহালু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন মোল্লার সাথে। তিনি জানান, আজকের নির্বাচনে তিনি ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পছন্দের প্রার্থী নেই। যারা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন তারা কেউ কোয়ালিফাই না। তাছাড়া সঠিক নির্বাচন নিয়েও তিনি সন্দেহ পোষন করছেন।
কথা হয় সদর আসনের আরেক ভোটারের সাথে তার নাম সাইফুল ইসলাম। তিনি মনে করেন বড় বড় প্রার্থীরা উন্নয়নের জন্য কোন কাজ করেন না। তারা নিজেদের আখের গোছাতে কাজ করেন। আমি কারো প্রতিই বিশ্বাসী না। এজন্য ভোট দিতে যাবো না।
ভোটে অবিশ্বস এখন প্রকাশ্য রুপ নিয়েছে। প্রায় সব শ্রেণি পেশার ভোটের নিরপেক্ষতা নিয়ে কথা তুলছেন। এমন পরিস্থিরি মধ্যে অনুষ্ঠিত এই ভোট আয়োজনে প্রার্থীদের ব্যক্তিগত লোকজনের উপস্থিতি ছাড়া সাধারণ মানুষ খুব কমই কেন্দ্রে উপস্থিত হচ্ছেন।
বগুড়া জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান, বলেন, আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ আছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই। তিনি ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এবং বেশি ভোটার যে কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
বগুড়া জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান, বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ আছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই। তিনি ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এবং বেশি ভোটার যে কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। অপদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার বিষয়ে তার কাছে কোন অভিযোগ নেই বলেও জানান।
উল্লেখ্য, বগুড়ার দুটি আসনে মোট ২০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বগুড়া-৬ সদর আসনে ১১ জন এবং বগুড়া-৪ কাহালু-নন্দীগ্রাম আসনে ৯ জন।
বগুড়া-৬ (সদর) আসনে নৌকা নিয়ে লড়ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দ, হিরো আলমসহ ১১ প্রার্থী আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে মহাজোটের শরীক দল জাসদ নেতা রেজাউল করিম তানসেন মশাল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির ফারুক, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আলোচিত হিরো আলম, কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল, মোশফিকুর রহমান কাজলসহ ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।