টানা তৃতীয় জয় তুলে নিলো রংপুর রাইডার্স। গতকাল শেখ মেহেদীর অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ঢাকা ডমিনেটর্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের স্থান পরিবর্তন না হলেও নকআউট পর্বের পথে অনেকটা এগিয়ে গেল ২০১৭ বিপিএল-এ শিরোপাজয়ীরা। ৪৩ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৭২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন মেহেদী। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ১৪৫ রানের লক্ষ্যে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই মোহাম্মদ নাঈমকে হারায় রংপুর। তবে ঢাকাকে চড়াও হতে দেননি মেহেদী। দ্বিতীয় উইকেটে রনি তালুকদারকে নিয়ে ৬৩ রানের জুটি গড়েন তিনি। মাঝে কিছু উইকেট হারিয়ে চাপে পড়লেও মেহেদী দলকে জয়ের পথে রেখে যান। সেখান থেকে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন দুই বিদেশি মোহাম্মদ নেওয়াজ ও হাসতউল্লাহ ওমরজাই। দু’জনই অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
এই জয়ের পর ৮ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে আছে রংপুর। ব্যাটে-বলে দারুণ নৈপুণ্যে ম্যাচসেরা হন মেহেদী। অন্যদিকে টানা হারের বৃত্তে নাসির হোসেনের ঢাকা ডমিনেটর্স। ৪ পয়েন্ট নিয়ে দলটির অবস্থান এখন তালিকার ৬ষ্ঠ স্থানে। একই সমান পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তলানিতে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ঢাকার দেয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫ বল খেলেও ডাক মেরে ফিরেছেন রংপুরের এই ওপেনার নাইম শেখ। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দলকে জয়ের পথেই রাখেন রনি তালুকদার ও শেখ মেহেদী। তবে নবম ওভারে ২৮ বলে ২৯ রান করে রনি তালুকদার ফিরলে ভাঙে এই জুটি। তবে আধিপত্য ধরে রেখে নিজের মতো খেলতে থাকেন শেখ মেহেদী। রনি ফেরার পরের ওভারেই ফেরেন ৪ নম্বরে ব্যাট করতে আসা শোয়েব মালিক। পাকিস্তানের এই অলরাউন্ডারের ব্যাটে আসে মোটে ৬ রান। ১০ বলে সমান ৬ রান করে ফেরেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানও, সৌম্য সরকারের শিকার তিনি। তবে এরই মাঝে অর্ধশতক তুলে নেন মেহেদী, মাত্র ৩১ বলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। যদিও দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়ে যেতে পারেননি তিনি। তবে দলকে তিন অংকের ঘরে পৌঁছে দেন। এরপর মোহাম্মদ নাওয়াজের সঙ্গে তার ২৮ রানের জুটি ভাঙে দলীয় ১০৫ রানে তিনি আউট হলে। আউট হবার আগে ৪৩ বলে ৬ চার আর ৫ ছক্কায় ৭৩ রান করেন শেখ মেহেদী। বাকি পথটা নাওয়াজ আর ওমরজাই মিলে পাড়ি দেন। দু’জনের ১৫ বলে ২৩ রানের জুটিতে এক ওভার বাকি থাকতেই ৫ উইকেটের জয় পায় রংপুর রাইডার্স। এর আগে টস জিতে ঢাকাকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় রংপুর। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই রংপুরকে ব্রেক থ্রু এনে দেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। দলীয় ১১ রানে দুর্দান্ত এক ইনসুইং ডেলিভারিতে মিজানুর রহমানকে বোল্ড করেন তিনি। আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারকেও শিকার করেন এই আফগান পেসার। ফ্লিক করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে থাকা শামীম হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন সৌম্য। আগের ম্যাচে ফিফটি করে বাঁহাতি এই ব্যাটার সাজঘরে ফেরেন মাত্র ১১ রানেই। দলীয় ২৮ রানে আরও এক ব্যাটারকে হারায় ঢাকা। এরপর ৪ রান করা অ্যালেক্স ব্লেকের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন মেহেদী হাসান। পাওয়ার প্লেতেই বড় ধাক্কা খাওয়ার পর সেভাবে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ঢাকা। মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে সেই চাপ সামাল দেওয়ার কাজ করেন উসমান গনি। থিতু হয়েও কেবল ১৪ রানে রাকিবুল হাসানের শিকার হয়ে ফেরেন মিঠুন। ইনফর্ম নাসির হোসেন ক্রিজে এলে ঢাকার রানের গতি কিছুটা বাড়ে। গনির সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়েন ঢাকার অধিনায়ক। রান-আউটে বিদায় নেওয়ার আগে ২২ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৯ রান করেন তিনি। অন্যদিকে একপ্রান্ত ঠিকই আগলে রাখেন গনি। যার ফলে ৫ উইকেট হারিয়ে ঢাকার সংগ্রহ পৌঁছায় ১৪৪ রানে। ৫৫ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৩ রানে অপরাজিত থাকেন ডানহাতি এই ব্যাটার। রংপুরের হয়ে ওমরজাই দু’টি এবং মেহেদী ও রাকিবুল নেন একটি করে উইকেট।