তিলেতিলে গড়ে তোলা দীর্ঘদিনের নেটওয়ার্ক ও ক্যাবল ব্যবসাই যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সাতকানিয়া চরতী ইউনিয়নের ব্যবসায়ী মোঃ নাজিম উদ্দিন সওদাগর। এমপি নদভীর শ্যালক ও প্রভাবশালী চেয়ারম্যান রহুল্লাহর কু-নজর পড়েছে বলে কথা। সন্ত্রাসীদের হাতে কোটি টাকা মূল্যের ব্যবসা হারিয়ে এখন প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে দিন কাটছে তার। সে সাথে রয়েছে রুহুল্লাহর সন্ত্রাসী বাহিনী ও মিথ্যা মামলার ভয় এবং প্রাণ নাশের শঙ্কা। শেষমেষ কোনো কুলকিনারা খুঁজে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে হাজির ক্যাবল ব্যবসায়ী মোঃ নাজিম উদ্দিন সওদাগর। আজ মঙ্গলবার (২৪শে জানুয়ারী) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী মোঃ নাজিম উদ্দিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাতকানিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সাথে নেটওয়ার্ক ও ক্যাবল ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন তিনি। সে ব্যবসায়ে কু-নজর পড়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীর। দাবী করে বসে মোটা অংকের চাঁদা। প্রতিনিয়ত হুমকি দমকি ভয়ভীতির মুখে কয়েক দফায় দাবীকৃত চাঁদার টাকা পরিশোধ করলেও সন্তোষ্ট না হয়ে পুরো ব্যবসা দখলে নিতে উঠে পড়ে লাগে চেয়ারম্যান। সম্পূর্ণ ব্যবসা দখল করতে তার বডিগার্ড নুর মোহাম্মদ, জাহাঙ্গীর ও আবদুল গফফার সহ সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে প্রতিনিয়ত প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে চেয়ারম্যান। তার কথা মেনে না নিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০২২ সালের জুলাইয়ে তৎকালীন ওসি তারেক হান্নানকে দিয়ে সাতকানিয়া থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে তিন দিন আটকে রাখার পর চাঁদাবাজি ও মারামারির ২টি মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করে ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন সওদাগরকে। এসময় তিনি আরো বলেন, কারাগারে ১৫ দিন থাকার পর জামিনে বের হয়ে রুহুল্লা চৌধুরীর বোনের জামাই স্থায়ী এমপি নদভীর সাথে দেখা করতে চট্টগ্রাম শহরের বাসায় গেলে সেখানে রুহুল্লাহ চৌধুরী ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী নাজিম উদ্দিন সওদাগরকে আটকে রেখে ১শ টাকা দামের ২০টি নন জুডিসিয়াল খালি ষ্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। পরে পুরো ব্যবসা দখলে নিয়ে নাজিম উদ্দিনের নাম পরিবর্তন করে ৮শ গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ১৮লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় রুহুল্লাহ চৌধুরী। সে সাথে প্রতিষ্ঠানের কন্ট্রোল রুম থেকে ১২লক্ষ টাকা দামের মেশিন ও সরঞ্জাম সরিয়ে নেয় বলেও অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে এক পর্যায়ে কান্না করতে করতে নাজিম উদ্দিন সওদাগর আরো বলেন, রুহুল্লাহ চৌধুরী ও তারসন্ত্রাসী বাহিনী যে কোনো সময়তাকে হত্যা ও গুম করে ফেলতে পারে। তাছাড়া আবারো মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কারাগারে প্রেরণের জন্য পুলিশকে তার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে। এ ভয়ে বর্তমানে ঘরবাড়ি ছেড়ে অনাহারে, অর্ধাহারে পালিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে বলে জানায় তিনি। এ অবস্থায় তাদের হাত থেকে বাঁচতে ও নিজের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ফিরে পেতে দ্রুত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সহ প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবী করেন, রুহুল্লাহ চৌধুরীর পিতা মুমিনুল হক চৌধুরী ছিলেন সাতকানিয়ার কুখ্যাত রাজাকার ও কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতা। রুহুল্লাহ চৌধুরী নিজেও জামায়াত শিবিরের দুর্ধর্ষ ক্যাডার ছিলেন। সে সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর নাম ব্যবহার করে সাতকানিয়ায় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে নদীর বালু উত্তোলন, মারামারি ও মাদক বিক্রি সহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। তারভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। এছাড়া রুহুল্লাহ চৌধুরী ২০২১সালের ৩০নভেম্বর চরতীতে ১২জন কৃষককে গুলি করে আহত করা ও একজনের চক্ষু উপড়িয়ে ফেলা মামলায় ১নং পলাতক আসামী বলেও জানান তিনি।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী ও নির্যাতিত মোঃ নাজিম উদ্দিন সওদাগর, মেয়ে নাহিদা সুলতানা, স্ত্রী রিফুল জান্নাত, মেয়ে তাছকিয়াতুল জান্নাত নাবিলা, মেয়ে তাসফিয়া তাবাস্সুম নিশাত, বড় ভাই মফজল সওদাগর, মেঝ ভাই মোঃ নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
সাতকানিয়ায় সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জোরপূর্বক কোটি টাকা মূল্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলে নেয়ার অভিযোগ

সংবাদটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন
একটি মন্তব্য করুন