জুনের ফিফা উইন্ডোতে ঢাকায় আসছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা, এমন সংবাদ দিতেই সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। গতকাল দুপুর আড়াইটায় সংবাদ সম্মেলনে এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানানোর কথা ছিল তাদের। তবে সকালে সেই সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করে ক্ষুদে বার্তা দেয় বাফুফে। বাফুফের মিডিয়া এক্সিকিউটিভ খালিদ মাহমুদ নওমী গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে জানান, পূর্বনির্ধারিত প্রেস ব্রিফিংটি অনিবার্য কারণবশতঃ অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বিধায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সংবাদ সম্মেলন স্থগিত হয়ে যাওয়ায় আর্জেন্টিনাকে ঢাকায় নিয়ে আসার বাস্তব অগ্রগতি আসলে কতদূর তা ঠিক পরিষ্কার হচ্ছে না। এই যখন অবস্থা তখনই টুইটারে আর্জেন্টিনার বাংলাদেশ আসা নিয়ে নতুন এক তথ্য দিলেন আর্জেন্টিনার এক সাংবাদিক। তিনি জানিয়েছেন জুনে খেলা নিয়ে বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে কোনো কথাই নাকি হয়নি। আর্জেন্টিনা দলের ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক গাস্টন এডুল গতকাল এক টুইটে লেখেন, বাংলাদেশে খেলতে আসা নয়, এই মুহূর্তে আর্জেন্টিনার অগ্রাধিকার হচ্ছে লিওলেন স্কালোনির চাকরি বিষয়ে অনিশ্চয়তা দূর করা।
টুইটে এডুল লেখেন, ‘আগামী জুনে খেলা নিয়ে আর্জেন্টিনা ও বাংলাদেশের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচ লিওনেল স্কালোনির চুক্তি নবায়ন সংক্রান্ত বিষয়টির সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আর্জেন্টিনা ফুটবল এসোসিয়েশন (এএফএ) অন্য কিছু ভাবছে না।’ একইদিন টিওয়াইসি স্পোর্টস চ্যানেলে এডুলের নেয়া আর্জেন্টিনার কোচ স্কালোনির সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয় স্কালোনির সঙ্গে এএফএ’র চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ।
শিগগিরই চুক্তি নবায়ন সংক্রান্ত ঘোষণা আসতে পারে এএফএ’র পক্ষ থেকে। উল্লেখ্য, ক্রীড়া সাংবাদিক গাস্টন এডুল ২০২২ বিশ্বকাপ কাভার করতে কাতার গিয়েছিলেন। তিনি সে সময় কাতারে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি আর্জেন্টাইন সমর্থকের সাক্ষাৎকারও নিয়েছিলেন। ১৮ই ডিসেম্বর ফ্রান্সকে হারিয়ে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জেতার পর তিনি লিওনেল মেসির সাক্ষাৎকারও নিয়েছিলেন। আর্জেন্টিনা ফুটবল এসোসিয়েশনের সঙ্গে তার ভালো যোগাযোগ রয়েছে। এদিকে মেসিদের বাংলাদেশ সফরের কোনো খবর নেই আর্জেন্টিনার গণমাধ্যমেও।
আর্জেন্টিনা ফুটবল এসোসিয়েশনের কাছ থেকে বাংলাদেশে আগমন সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পায়নি দেশটির সব গণমাধ্যম। এই প্রসঙ্গে সার্জিও ল্যাভেন্সকি নামে দেশটির একজন সিনিয়র সাংবাদিক জানান, ‘এএফএ (আর্জেন্টিনা ফুটবল এসোসিয়েশন) আমাদের এই বিষয়ে কিছুই জানায়নি। যতটুকু জানতে পেরেছি বিষয়টি নিয়ে মাত্র আলোচনা চলছে। তবে আলোচনা হচ্ছে ভারতীয় এই এজেন্টের মাধ্যমে। এখানে আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশনের কোনো ভূমিকা নেই।’ কাতার বিশ্বকাপ চলাকালেই বাংলাদেশি সমর্থকদের নিয়ে আর্জেন্টাইন মিডিয়ায় অনেক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। সে সময় মেসিদের সমর্থন নিয়ে নিউজ করতে আর্জেন্টিনা থেকে একজন সাংবাদিকও এসেছিল বাংলাদেশে। ফলে দুই দেশের ফুটবলে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তবে বাফুফের মন্তব্য নিয়ে বিপাকে দেশটির গণমাধ্যম। এর আগে গতকাল বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন জানিয়েছিলেন, জুনের ফিফা উইন্ডোতে ঢাকায় আসতে রাজি হয়েছে আর্জেন্টিনা। এখন দুই পক্ষের মধ্যে কিছু টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন নিয়ে আলোচনা চলছে। ঢাকায় আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ কারা হবে তা নিয়েও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বাফুফে। কয়েকটি দেশের নাম প্রস্তাব করবে আর্জেন্টিনা ফুটবল এসোসিয়েশন (এএফএ)। সেখান থেকে বাছাই করে যেকোনো একটি দেশকে প্রতিপক্ষ হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হবে।