বাজারে আবারও বেড়েছে ডিমের দাম। অন্যদিকে আদা, রসুন ও সবজির দামও বেড়েছে। এদিকে চালের দামে এখনো তেমন স্বস্তি নেই। তবে ভারত থেকে আমদানির খবরে কিছুটা কমেছে চিনির দর। শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
হাজীপাড়া বউবাজারে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম ১৩০ টাকা বিক্রি হতে দেখা যায়। সেখানে বিক্রেতা এজাজুল হক বলেন, পাইকারি বাজারে ডিম নাই। সে কারণে এখন প্রতি ডজনে ১৫ টাকা বাড়তি বিক্রি করতে হচ্ছে। গত সপ্তাহেও ডিমের দাম ১১৫-১২০ টাকা ডজন ছিল। তিনি বলেন, তাগিদ দিয়েও চাহিদা মতো ডিম পাচ্ছি না। শীতের কারণে ডিমের চাহিদা বাড়ায় এ পরিস্থিতি বলে জানিয়েছে পাইকাররা।
তবে কিছু এলাকার বাজারে ১২৫ টাকায়ও প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে। হালি নেয়া হচ্ছে ৪২ টাকা।
অন্যদিকে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে দেশি মুরগি ও হাসের ডিমের দামেও। প্রতি হালি হাঁসের ডিম এখন ৭৫ টাকা। যা পাঁচ টাকা বেশি। একইভাবে দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে আদা-রসুনের দাম। বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকায়। যা ১২০-১৪০ টাকার মধ্যে ছিল। অন্যদিকে ৮০-১০০ টাকার মধ্যে থাকা রসুনের দাম এখন ১২০-১৫০ টাকা দরে উঠেছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম ২০ শতাংশ এবং আদার দাম ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
আদা-রসুনের দাম বাড়ার বিষয়ে শ্যামবাজারের পাইকারি বিক্রেতারা পণ্যের সরবরাহ কম থাকাকে দায়ী করছেন। তাদের দাবি, চীনে আদা-রসুনের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি সংকট রয়েছে দেশি আদা-রসুনের।
বাজারে কিছুটা কমেছে চিনির দাম। আগে ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া চিনি এখন খুচরায় ১০৭-১১৫ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। যদিও সরকার নির্ধারিত দাম সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা। যা দুই মাস আগে নির্ধারণ করা হলেও এতদিন সে দামে চিনি পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সুমন হাওলাদার বলেন, দুদিন ধরে খোলা চিনির দাম একটু কমেছে। কাল ভারত থেকে চিনি আমদানি হচ্ছে এমন খবর শুনেছি। সেটার প্রভাব বাজারে পড়েছে।
দুই সপ্তাহ আগে চালের দাম কিছুটা কমতির দিকে ছিল। তবে সেটা স্বস্তি দেয়ার মতো না। তখন ২-৩ টাকা কমেছিল দাম। নতুন করে আর চালের দাম উল্লেখ করার মতো কমেনি। কয়েক মাসের ব্যবধানে হিসেব করলে চালের দাম এখনো অনেক চড়া। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এখন বাজারে গুটি স্বর্ণা জাতের চালের কেজি ৪৮-৫২ টাকা। পায়জাম ও বিআর-২৮ জাতের মাঝারি আকারের চালের কেজি কেনা যাবে ৫৮-৬০ টাকা দরে। তবে চিকন বা মিনিকেট চালের দাম কমেনি। এ মানের চাল এখনও ৭২-৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ওদিকে বাজারে দাম বেড়েছে শীতকালীন সবজির। আকার ভেদে বাঁধাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। কেজিপ্রতি শসা ৬০-৭০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা, টমেটো ৫০-৬০ টাকা, শিম ৫০-৬০ টাকা ও করলা ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি আকারভেদে ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৫০-৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০, পটল ৬০, ঢেঁড়স ৬০, কচুর লতি ৭০-৮০, পেঁপে ৩০-৪০, বরবটি ৬০-৮০ ও ধুন্দল ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে কাঁচা মরিচের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আগে কাঁচামরিচের কেজি ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, লেবুর হালি ১৫-২০ টাকা। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।
১১ নম্বর বাজারের সবজি বিক্রেতারা বলেন, শীত ও কুয়াশার কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে। আর এ কারণে সবজির দাম বেড়েছে। শীত ও কুয়াশা কমার সঙ্গে সঙ্গে আবার কমতে পারে সবজির দাম।